প্রতারণা মামলায় তিন পুলিশ সদস্য গ্রেফতার

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক :রাজশাহীতে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগ তিন পুলিশকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। এর আগে তাদের আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এদের মধ্যে একজন সহকারি উপপরিদর্শক ও দুইজন কনস্টেবল আছেন।

শনিবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করে কারিমা খাতুন নামের এক পরীক্ষার্থী তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, এ.এস.আই গোলাম রাব্বানী, কনস্টেবল আবদুর রহমান এবং শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল। এএসআই গোলাম রাব্বানীও আগে আরএমপিতে কনস্টেবল পদে ছিলেন। পরে তিনি পদোন্নতি পেয়ে এ.এস.আই হোন। আবদুর রহমান এবং শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আর.এম.পি) সদর দফতরে কর্মরত ছিলো।

শাহরিয়ার পারভেজ শিমুলের বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায়। আবদুর রহমানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। গোলাম রাব্বানীর বাড়ি কোথায় তা জানা যায়নি। আবদুর রহমান, গোলাম রাব্বানী ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুলকে রাতে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের একটি সুত্র জানিয়েছে, গেল শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার আগে পুলিশের এই সদস্যরা ১৫-২০ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেন। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেককে খুবই ছোট আকারের হেডফোন সরবরাহ করেন। এই হেডফোনের মাধ্যমে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের সব উত্তর বলে দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার করে চুক্তি করা হয়েছিল। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল চেক এবং স্ট্যাম্প। পুলিশের অভিযানে কিছু স্ট্যাম্প, একটি ১০ লাখ টাকার চেক এবং ১৪টি গোপন ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার আগের রাতে এই পুলিশ সদস্যদের এমন তৎপরতার বিষয়ে জানতে পেরে ১মেই আরএমপি সদর দফতরের কম্পিউটার অপারেটর শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল এবং আবদুর রহমানকে আটক করে আরএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। বৃহস্পতিবার রাত হতে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের নগর ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে রাখা হয়। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানা থেকে এএসআই গোলাম রাব্বানীকে আটক করা হয়।

পুলিশের ধারণা, এ চক্রের সঙ্গে পুলিশ নয় এমন প্রতারকও জড়িত। এ চক্রের সঙ্গে আর কে জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। চক্রটির বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো হচ্ছে। বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতার করা হবে।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, প্রতারণার চেষ্টার অভিযোগে এক পরীক্ষার্থী শনিবার সন্ধ্যায় রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় মোট পাঁচজনকে আসামী করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজনের নাম উল্লেখ আছে। বাকি দুজনকে অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করেছে ভুক্তভোগী। এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে এএসআই গোলাম রাব্বানী এবং কনস্টেবল আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারক হিসেবে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ সদস্য হিসেবে না।