মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৭ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
শেষটা হয়তো আরেকটু রোমান্টিক হতে পারত। হতে পারত আরেকটু স্বপ্নময়। কিন্তু রূঢ় বাস্তবের মাটিতে পড়ে সেই রোমান্টিসিজমের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল। খানিকটা হতাশাজনকভাবে দ্বিতীয় সেরা হয়ে শেষ হল ভারতীয় টেনিসের গ্ল্যামার গার্ল সানিয়া মির্জার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সফর। জীবনের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের যে স্বপ্ন অনুরাগীদের সানিয়া দেখাচ্ছিলেন, সেটা অধরাই থেকে গেল। রোহন বোপান্নাকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মিক্সড ডাবলসে রানার-আপ হলেন সানিয়া।
ফাইনালে ব্রাজিলের স্টেফানি-মাতোস জুটির কাছে সানিয়ারা স্ট্রেট সেটে হারলেন সানিয়ারা। খেলার ফল ৬-৭ (২-৭), ২-৬। ৩৬ বছরের সানিয়া ৪২ বছরের বোপান্নাকে নিয়ে জীবনের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠবেন, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সেটা কল্পনাও করা যায়নি। কিন্তু টুর্নামেন্টের অবাছাই ভারতীয় জুটি ফাইনালে উঠে একপ্রকার অসাধ্যসাধন করেছে।
বিশেষ করে সেমিফাইনালে যেভাবে তিন নম্বর বাছাই ব্রিটেনের নিল স্কুপস্কি ও আমেরিকার ডেসিরে ক্রাউজিকের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত লড়াই করলেন সানিয়ারা, তা অনেক টেনিস ভক্তকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল, হয়তো ভারতীয় জুটি কেরিয়ারের সায়াহ্নে এসে কোনও ম্যাজিক দেখাবে।
কিন্তু তেমনটা হল না।
ফাইনালে ব্রাজিলিয়ান জুটির কাছে ১ ঘণ্টা ২৭ মিনিটের ম্যাচে পরাজিত হতে হল ভারতীয় জুটিকে। প্রথম সেটে অবশ্য লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি ছিল। প্রথম সেটের অষ্টম গেমে বিপক্ষ ব্রাজিলীয় জুটির সার্ভিস ভেঙে সানিয়ারাই এগিয়ে যান। কিন্তু পরের গেমেই পালটা সার্ভিস ভেঙে সমতা ফেরায় ব্রাজিলিয় জুটি।
সেই সেট গড়ায় টাই ব্রেকারে। কিন্তু স্নায়ুর চাপ ধরে রেখে টাই ব্রেকারে ২-৭ পয়েন্টে জিতে যায় অপেক্ষাকৃত তরুণ ব্রাজিলিয় জুটি। দ্বিতীয় সেটে আর সানিয়ারা দাঁড়াতে পারেননি। প্রায় একপেশেভাবে ব্রাজিলিয়ান জুটি জিতে যায় ২-৭ পয়েন্টে।
এদিন জিততে পারলে ৭টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব নিয়ে কেরিয়ার শেষ করতে পারতেন সানিয়া। এর আগে ৩টি ডাবলস এবং তিনটি মিক্সড ডাবলস গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন ভারতীয় টেনিসের গ্ল্যামার গার্ল। ঘটনাচক্রে তাঁর জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামও ছিল এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনই ।
২০০৯ সালে এই টুর্নামেন্ট জিতেই বিশ্ব ডাবলস মঞ্চে নিজের আগমন বার্তা দিয়ে দেন টেনিস সুন্দরী। ইচ্ছা ছিল এই খেতাব জিতে শেষ করার। তেমনটা হল না। সানিয়া আর পেশাদার টেনিস কোর্টে নামবেন না। তবে আগামী মাসে একটি আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টে দেখা যাবে তাঁকে। পেশাদার কোর্টকে বিদায় জানাতে গিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই আবেগপ্রবণ হয়ে গেলেন সানিয়া। কান্নায় ভিজল তাঁর চোখ।
তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন