অন্ধজনে দেহ আলো

আপডেট: আগস্ট ৭, ২০১৭, ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ

গুরুদাসপুর প্রতিনিধি


অন্ধজনে দেহ আলো করে টানা ২৩ বছর ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে নাটোরের ‘গুরুদাসপুর চক্ষু হাসপাতাল’। নাটোর-পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষ নামমাত্র টাকায় চোখেরমতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের জরুরি সেবা পাচ্ছেন। মিলছে অপারেশনের সুযোগ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক সেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক আশরাফুল ইসলাম।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ এই চক্ষু হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৬০-৮০ জন রোগি চিকিৎসা নিতে আসেন। ধানকাটা মৌসুমে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। চোখের যথাযথ চিকিৎসার জন্য রয়েছে অত্যাধুনিক টপকোনমাইক্রোস্কোপ। বিশেষজ্ঞ চিকিবৎসকগণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চোখের ছানি অপারেশনসহ কৃত্রিম লেন্স স্থাপনের কাজটি এখানেই করে থাকেন। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের জন্য রোগিদের পাঠানো হয় সিরাজগঞ্জে।
হাসপাতালটির সাধারণ সম্পাদক প্রবীন শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, একটা সময় ছিল- চলনবিলে ধানকাটা মৌসুমে ধান ছিঁটকে দিন মজুরদের চোখে এসে লাগতো। তাছাড়া গুরুদাসপুরে প্রায় তিন শতাধিক ধানের চালের ছাই উড়ে এসে সকলের চোখে ঢুকে পড়তো। তখন প্রাথমিক চিকিৎসা নিতেও যেতে হতো নাটোর বা পাবনা। এতে টাকা ও সময় ব্যয় হতো। এসব দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে গুরুদাসপুর উপজেলা সদরে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়। এলাকার মানুষের দানের জায়গায় হাসপাতালটি গড়ে উঠেছে। এখন সকলেই সুবিধা ভোগ করছেন।
১৯৯৩ সালের ৩ নভেম্বর স্থানীয় কিছু দানবীরদের সক্রিয় সহায়তায় চক্ষু হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এমএ মতিনের প্রতিষ্ঠিত সিরাজগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দ্বীপসেতু ও বিএনএসবি চক্ষুহাসপাতালের’ অঙ্গ সংগঠন হিসেবে গুরুদাসপুরেও হাসপাতালটি চালু হয়। উদ্দেশ্য ছিল চলনবিল অঞ্চলের মানুষকে স্বল্প খরচে চোখের সেবা দেয়া। এজন্য তিনি সকল কারিগরি সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন। বর্তমানে এই হাসপাতালটি ২০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে সরকারি অনুমোদন লাভ করেছে।
২০১৩ সালে হাসপতালটির প্রতিষ্ঠাতা এমএ মতিনের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে চক্ষুবিশেষজ্ঞ এমএ মুহিত দায়িত্বভার নিয়েছেন। তিনি হাসপাতালটির উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সর্বাত্মক সহায়তা রাখছেন।