অপহরণ ও সন্তানের আহাজারি শুনিয়ে মায়ের কাছে ফোন, অতপর…

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪, ১১:২১ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী নগরীর উপশহরের বাসিন্দা রোখসানা পলি নামের এক গৃহবধূর কাছে হঠাৎই অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। বলা হয়, তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ না দিলে দেয়া হয় হত্যার হুমকি। পরক্ষণেই মুঠোফোনে শোনানো হয় ছেলের আহাজরি। এরপর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ঘটে যায় তুগলকি সব কান্ড। তবে শেষ মূর্হূতে প্রতারণা থেকে রক্ষা পেয়ে সন্ধ্যায় নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপশহর পুলিশ ফাঁড়িতে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এই গৃহবধু।

অপহরণ ও সন্তানের রোখসানা পলি বলেন, তার ছেলে নগরীর শাহিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা প্রবাসী। তিনি শিশুটিকে নিয়ে একটি বাসায় থাকেন। সেখান থেকে শিশুটি প্রতিদিন বিদ্যালয়ে যায়। বুধবারও তার ছেলে স্কুলে গিয়েছিলো। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি ফোন কল আসে। ওপাশ থেকে জানতে চাওয়া হয়, আমার ছেলে কোথায়। আমি বলি, ছেলে স্কুলে গেছে। তখন প্রতারকচক্র বলে, স্কুলে নয়, আমার ছেলে আছে তাদের হেফাজতে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অক্ষত পেতে হলে এখনই ৫ লাখ টাকা পাঠাতে হবে।

এ কথা শুনেই আমি মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে স্কুলের দিকে যায়। এরমধ্যে আবার ফোন আসে। এবার ‘তুই’ করে বলা হয়, ‘এই কথা কাউকে বলবি না। বললে এখনই ছেলের হাত কেটে দেব।’ এ সময় একটি শিশুকণ্ঠের কান্নার আওয়াজ শোনানো হয়। ওপাশ থেকে শিশুটি বলে, ‘মা, আমি এখানে। আমাকে নিয়ে যাও।’ ওই মুহূর্তে বুঝতে পারেন নি কান্নার শব্দটি ছেলের কি না?

এর-মধ্যে এসব কথা কাউকে বললে বিকালে ছেলের লাশ পায়া যাবে এমন হুমকি দেয়। ভয় পেয়ে এখন আপাতত ২ লাখ টাকা দিতে পারব বলে জানিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দোকানে যায়।

রোখসানা জানান, এতগুলো টাকা একসঙ্গে পাঠাতে দেখে দোকানি তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র আনতে বলেন। তিনি ছুটে যান বাড়িতে। আর সার্বক্ষণিক ফোনকলে প্রতারক যুক্ত ছিলো। তাকে অন্য কিছু ভাববার কোন সুযোগ দেয় নি।

তিনি আরও জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আবার দোকানে আসেন। মোবাইলে নম্বরও তোলা হয়। টাকার অঙ্কও বসানো হয়। শুধু পাঠানো বাকি। এমন সময় ওই পথ দিয়েই স্কুল থেকে ফিরছিলো ছেলে। পরিচিত দোকানি চিৎকার করে বললেন, ‘এই যে, আপনার ছেলে। সকালেই তো মোবাইলে টাকা ওঠাতে এসেছিল।’ ছেলেকে দেখামাত্র মা ফোন কেটে দেন। পরে আবার ফোন দিলে ফোন ধরে বিকাশের দোকানিকে দেন রোখসানা। দোকানি বলেন, ‘আপনি কে বলছেন?’ দোকানির গলা শোনামাত্র ওপাশ থেকে ফোন কেটে দেয়া হয়। এরপর ফোন বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্র।

তবে এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর জানান, এ বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে জানাবেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version