অপারেশন ডেভিল হান্ট: সমন্বয় ‘এক জায়গা থেকে’

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে যে অভিযান শুরু হয়েছে, সেটির সঙ্গে যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযানের ‘পার্থক্য’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।

শনিবার নতুন এ অভিযান শুরুর ঘোষণার পর তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রায় পাঁচ মাস ধরে যে অভিযান চলছে, সেখানে বাহিনীগুলো অপারেশন ফিল্ডে গিয়ে ‘যার যারটা মিলিয়ে নেন’, কিন্তু এখানে পরিকল্পনাটা সব বাহিনী একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে করবে।
এছাড়া অপারেশন ডেভিল হান্টের ব্যাপ্তিও বেশি বলে তুলে ধরেন পুলিশপ্রধান।

গাজীপুরে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং পাল্টা হামলায় কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনার পর সারাদেশে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামের অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয় অন্তর্র্বতী সরকার।

সেনা, বিমান ও নৌবাহিনী ছাড়াও পুলিশ, বিজিবি, আনসার, কোস্ট গার্ড সদস্যদের সমন্বয়ে এ অভিযান চালানো হবে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন আইজিপি বাহারুল।

যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঝামেলা করতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এ অভিযান চালানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যারাই ব্যাঘাত ঘটাবে, সেটা গোলযোগ সৃষ্টিকারী হতে পারে, নাশকতা সৃষ্টিকারী হতে পারে, সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী হতে পারে, গুজব প্রচারকারী হতে পারে- সবকিছুই এর মধ্যে চলে আসবে।”

এ অভিযান কতদিন চলবে সে বিষয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, “এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।”
বর্তমানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর একটি অভিযান চলমান রয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের অবস্থানের মধে গত ৪ সেপ্টেম্বর এ অভিযান শুরু হয়।
সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসারের সমন্বয়ে যৌথ অপারেশন টিম এ অভিযান চালাচ্ছে। দেশজুড়ে এ অভিযানে অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চলমান যৌথ বাহিনীর অভিযান ও ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এক নয় বলে তুলে ধরে আই

জিপি বলেন, “ওখানে (যৌথ বাহিনীর অভিযান) উনারা যার যারটা করে অপারেশন ফিল্ডে গিয়ে মিলিয়ে নেন, কিন্তু এখানে পরিকল্পনাটা সব বাহিনী একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সমন্বিতভাবে করবে।
“এখানে একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে, যেখানে আগে থেকেই সবকিছু সমন্বয় করে করা হবে।”

অপারেশন ডেভিল হান্টের বিষয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “গতকাল (শুক্রবার) রাতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনায় আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সভা হয়।

“সভায় সংশ্লিষ্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

শনিবার থেকেই সারাদেশে এই অভিযান শুরু হবে এবং রোববার এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে।
এর আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ নামে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়।

অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকায় ২০০৩ সালের ৯ জানুয়ারি সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যারাকে ফিরে যায় সেনাবাহিনী।
প্রায় চার মাসের ওই অভিযানে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় বলে সেসময় ও পরে সংবাদমাধ্যমের তথ্যে উঠে আসে। তবে তাদের বেশির ভাগই হৃদরোগে মারা গিয়েছিলেন বলে সেসময় যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

ওই অভিযানকে দায়মুক্তি দিতে করা হয় ‘যৌথ অভিযান দায়মুক্তি আইন, ২০০৩’।
এর প্রায় এক যুগ পর ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়মুক্তির আইনকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে হাই কোর্ট।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version