অবৈধ পুকুরখননে লাঠিয়াল বাহিনি বন্ধে-জনপ্রতিনিধিসহ সমন্বিত উদ্যোগ চাই

আপডেট: মে ৩০, ২০২৩, ১:০১ পূর্বাহ্ণ

অবৈধ পুকুর খননের দুর্বৃত্ত-দৌরাত্ম্য থেমে নেই। বরং অবৈধ পুকুর খননকারী সিন্ডিকেট দিন দিন আরো শক্তিশালী ও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালায় বটে কিন্তু তার প্রভাব মোটেও সিন্ডিকেটের ওপর পড়ে না। তারা অবৈধ পুকুরখনন চালিয়ে যাচ্ছে। পুকুর খনন হচ্ছে দিনে, পুকুর খনন হচ্ছে গভীর রাতে। যখন যে সুযোগ কাজে লাগানো যায়!
প্রশাসনের অভিযান, জরিমানা, দন্ড, জব্দ এবং অবৈধ পুকুরখননকারীদের দোতানা অনেকটা ‘চোর পুলিশে খেলা’র মত। কোথাও যেন একটা সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
তবে এটা ঠিক যে, অবৈধ পুকুর খননের ফলে দুর্বলের স্বার্থের ব্যাপক হানি হচ্ছে। তারা নানা সঙ্কটের মধ্যে পড়ছে। পুকুর খননের ফলে যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাতে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের আবাদ প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কোথাও বা পুকুর খননের সম্মিলিত প্রতিবাদ হচ্ছে। তাতে সামাজিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতও সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসনের অভিযানের পরও পুকুর খননকারী সিন্ডিকেট মোটেও দুর্বল নয় বরং দুর্বৃত্ত-শক্তি প্রয়োগ করতেও দ্বিধা করছে না। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে আইনের পরিপন্থি কাজ করেও ওই সিন্ডিকেট কীভাবে তাদের অপরাধ সংগটিত করে যাচ্ছে? নিশ্চয় পেছন থেকে তাদের কেউ না কেউ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তারা অবশ্যই প্রভাবশালী অংশ।
অবৈধ পুকুর খননকারীরা লাঠিয়াল বাহিনিও পুষছে। জেলার মোহনপুর উপজেলার মরগা বিলের মধ্যখানে প্রভাব খাটিয়ে ফসলি জমিতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পুকুর খননকালে লাঠিয়ান বাহিনি নিয়োগের খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদ মাধ্যমে। দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ২৫ মে দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে অভিযানে যান মোহনপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি)। তিনি সেখান থেকে পুলিশের সাহায্যে পুকুরকাটা যন্ত্রের চালকসহ দুইজনকে আটক করে। পরদিন ২৬ মে সন্ধ্যায় কেশরহাট-ভবানীগঞ্জ সড়কে ২০/২৫ জনের একটি লাঠিয়াল বাহিনী প্রহরায় রেখে পুনরায় পুকুর খনন কাজ শুরু করা হয়। স্থানীয়দের তথ্যে পুলিশ অভিযানে অগ্রসর হলে পুকুর খননকারী ভেকু মেশিন ফেলে লাঠিয়াল বাহিনির সাথে পালিয়ে যায়।
এমনই নানা ফন্দি-ফিকির করে কিংবা নেপথ্যে কোনো ধরনের সমঝোতা করে বা বাধ্য করে রাজশাহীর সব উপজেলাতেই পুকুর খনন চলছে। খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে কৃষি জমিকে সুরক্ষা দেয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ প্রশাসন কিংবা পুলিশ বাহিনির ওপর ছেড়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসলে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। অবৈধ পুকুর খননে চাপ সৃষ্টির সুযোগ বন্ধ করতে সমন্বিত উদ্যোগ খুবই জরুরি। নতুবা একে অপরকে দোষারোপ করা যাবে সঙ্কটময় পরিস্থিতির অবসান সম্ভব হবে না।