অযথা খুঁচিয়ে আপনারা শক্তি ক্ষয় করছেন: ভারতের উদ্দেশ্যে রাবি উপাচার্য

আপডেট: ডিসেম্বর ৬, ২০২৪, ৭:৩৯ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক


ভারতের উদ্দেশ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেছেন, আপনারা আপনাদের মতো খোঁচাচ্ছেন, আপনারা অচিরেই দেখবেন যে এই খোঁচাখুচিতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না, কাজ হয়নি এবং আমার খুব দৃঢ় বিশ্বাস যে কোনো কাজ হবেওনা। আপনারা আসলে আপনাদের শক্তি ক্ষয় করছেন।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘সম্প্রীতি মঞ্চ’র ব্যানারে আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের সম্মিলিত ঐক্যের শপথ পাঠ ও সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি।

আয়োজন সম্পর্কে উপাচার্য বলেন, আমরা যেভাবে বড় হয়েছি, আমাদের প্রজন্মে এই ধরনের আয়োজনের যে প্রয়োজন হচ্ছে, সেটাই চিন্তা করতে খারাপ লাগে। কারণ এই শপথ বাক্যে বলা কথাগুলো বাংলাদেশের মানুষ কোনো ধরণের শপথ না করেও আজীবন এগুলো মেনে আসছে। এবং সচেতনভাবে আমাদের কখনো অস্প্রদায়িক প্রমাণ করার প্রয়োজন পড়েনি। কিন্তু আজকে একটা বিশেষ প্রেক্ষাপটে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি নানান দিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা যা না, তাই বলা হচ্ছে এবং বেশ জোরেসোরেই বলা হচ্ছে। কাজেই একটা প্রতিবাদের প্রয়োজন আছে।

তিনি আরও বলেন, এই দেশের মানুষ এই দেশের মাটিতে, আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠার কারণেই তাদের ভিতরে যে আবেগ এবং অনূভুতির সৃষ্টি হয়েছে, তার কারণে অন্তর্গত যে অসাম্প্রদায়িক আচরণ, সেটা থেকে বের হয়ে যাবে না। আপনারা (ভারত) আপনাদের মতো খোঁচাচ্ছেন, আপনারা অচিরেই দেখবেন যে এই খোঁচাখুচিতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না, কাজ হয়নি এবং আমার খুব দৃঢ় বিশ্বাস যে কোন কাজ হবেওনা। আপনারা আসলে আপনাদের শক্তি ক্ষয় করছেন। আপনারা আপনাদের মতো ফাঁদ পাততে থাকুন, নিজেদের ছোট করতে থাকুন, আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরবো না ইনশাআল্লাহ।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা) বলেন, বর্তমান এই ধরনের সম্প্রীতি অনুষ্ঠান খুবই দরকার ছিল। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে চলাফেরা করি না, বরং বাঙালি হিসেবে চলাফেরা করি। বাঙালি হলো আমাদের মূল পরিচয়। আমাদের ওপর কেউ যদি কোনো ধরণের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়, তাহলে আমরা তা শক্ত হাতে রুখে দিব।

রাবির ভেটোনারি এ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগে পড়ুয়া নেপালী শিক্ষার্থী সানি কুমার দাস বলেন, সাত বছর ধরে বাংলাদেশে রয়েছি। বাংলাদেশ আমার খুবই ভালো লাগছে, সুন্দর একটা দেশ, বাংলাদেশের মানুষ এতো কো-অপারেটিভ! আমি প্রথমে বাংলা বলতে পারতাম না। কিন্তু এখন আমার নেপালি ভাষার থেকেও বাংলাটা ইজি মনে হয়। ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন দেশে যেমন পাকিস্তান-ভারত, হিন্দু-মুসলিম নিয়ে ঝগড়া হয় কিন্তু আমাদের দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিয়ে কোনো ঝামেলা হয় না। যদি ঝামেলা হতো, তাহলে আমাদের সিটির মেয়র মুসলিম কেউ হতো পারতো না। যেখানে ২ ভাগ মুসলমান আর ৯৮ভাগ হিন্দু।

মানুষ মানুষের জন্য বাচতে হবে। একদিন মাটির নিচেই যাইতে হবে সবাইকে। আমি বাংলার মাটিকে খুবই ভালোবাসি।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন রাবি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদসহ বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ