আইএমএফ-এর ঋণ অনুমোদন বর্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩, ১:১০ পূর্বাহ্ণ

সব অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদ। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ এর নির্বাহী বোর্ডের সভা এটি অনুমোদিত হয়।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি আইএমএফের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ তার ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ওইদিন তাদের মধ্যে ঋণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে গত নভেম্বরে ঢাকায় কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ। সেই ঋণচুক্তির শর্তসহ খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বাংলাদেশ সফর করেন আইএমএফ এর উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে ৪৫০ কোটি ডলারের যে ঋণ চেয়েছে, তার মধ্যে তিন ধরনের ঋণ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ), বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) ও রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ)। ইসিএফ এবং ইএফএফ থেকে পাওয়া যাবে ৩২০ কোটি ডলার। আরএসএফ থেকে পাওয়া যাবে ১৩০ কোটি ডলার। এই ঋণ পাওয়া যাবে ৪২ মাসে সাত কিস্তিতে। ঋণের গড় সুদের হার ২ দশমিক ২ শতাংশ।
আইএমএফ-এর এই ঋণ অনুমোদন বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি বার্তা বয়ে এনেছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের যেসব খাত প্রয়োজনীয় ডলার রিজার্ভের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেগুলোর চাঙ্গা হবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আইএমএফ-এ এই ঋণ অনুমোদন দেশের রাজনীতিতেও একটা প্রভাব পড়বে। স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী দলের একটি অংশ এই ঋণ অনুমোদন যাতে না হয় সেই প্রত্যাশাই করছিল। সে ক্ষেত্রে বলাই যায় এই ঋণ অনুমোদন ক্ষমতাসীনদের জন্যও ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। চলতি বছর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশ মুখর থাকবে। আইএমএফ-এর ঋণ অনুমোদন বর্তমান সরকারকে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার দোলাচল থেকে বের হওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি নিয়ে যে আলোচনা-সমালোচনা চলছিল তা একটি নতুন মোড়ে প্রবেশ করতে পারে যা আওয়ামী লীগ সরকারকে স্বস্তি এনে দিবে।
এই ঋণের রাজনৈতিক প্রভাব থাকবে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার ধাধা তৈরি করে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি যে সব ইস্যু তৈরি করতে পারতো- সেটা আর তেমন করে সম্ভব হবে না। আইএমএফ-এর ঋণ অনুমোদন বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে গুরুত্ব যেমন আছে তেমনি এর তাৎপর্যও অনস্বীকার্য।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ