রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সমাসন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ইদুল ফিতর। ইদ মানেই আনন্দ, ইদ মানেই সৌহার্দ-সম্পর্ক, পারিবারিক মিলনমেলা। ইদের ছুটিতে কোটি মানুষ শেকড়ের টানে ঘরে ফিরতে শুরু করবে আর ক’দিন পরেই। কিন্তু এই ইদযাত্রা কেমন হবে? হয়রানি আর দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে না তো? দূর পাল্লার সব যানবাহন যানজট ছাড়া চলতে পারবে তো, ইদযাত্রায় আবহাওয়া কেমন থাকবে কিংবা সড়কপথে ডাকাতি- ছিনতাইয়ের মুখে পড়তে হবে কি? যাত্রিদের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে। তদুপরি ইদের আনন্দ বাবা-মাসহ সব প্রিয়জনদের সাথে ভাগ কওে নেয়ার আকাক্সক্ষার মোটেও কমতি হবে নাÑ এ ধারাবাহিক অভিজ্ঞতা।
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যাভাস মতে, ২৩ মার্চের পর থেকে গরম পড়বে। এর কয়েকদিনের মাঝেই তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। ইদের দিনও বেশ গরম পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে থাকবে। বুঝাই যাচ্ছে এবারের ইদে গরম আবহাওয়া থাকবে।
ইদযাত্রায় ট্রেনে ভ্রমণ বেশ আরাম দায়ক। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দিনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এবারে ট্রেনের টিকিট নিয়ে কোনো ধরনের জালিয়ািিত কিংবা দুর্নীতির খবর পাওয়া যায় নি। তবে অনলাইনে টিকিট পাওয়া খুবই দুরূহ একটি বিষয়।
দেশের অধিকাংশ মানুষকে বাসে করেই গন্তব্যে রওনা দিতে হয়। বাসের অগ্রিম টিকিটও বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু সড়কপথে পূর্বের অভিজ্ঞতা হলো তিব্র যানজটের মধ্যে পড়তে হয়। এতে করে যাত্রিদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যমুনা সেতু পশ্চিম সংযোগ থেকে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ কাজ সিংহভাগ শেষ হওয়ায় উত্তরবঙ্গের মানুষের এবারের ইদযাত্রা হবে অনেকটায় স্বস্তিদায়ক। তবে এই পথে কিছুটা ভোগান্তির কারণ হতে পারে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক। মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে নির্মাণকাজ চলমান থাকা ও কয়েকটি পয়েন্টে এক লেন থাকায় দেখা দিতে পারে যানজট।
সড়কপথে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম ডাকাতি। মহাসড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় ইদযাত্রায় বাড়ি ফেরা মানুষদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনি বলছে, ইদযাত্রা নিরাপদ করতে তারা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। পুলিশ প্রায় ১৪০০ ডাকাতের তালিকা তৈরি করেছে এবং তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২১৪টি চেকপোস্ট এবং ৮০৩টি টহল টিমের ব্যবস্থা করেছে।
ঘরে ফেরা মানুষের ইদযাত্রা এবং ইদের পর কর্মস্থলে ফেরাটা দুর্ভোগ ও হয়রানিমুক্ত হবে এবং একই সাথে অনাকাক্সিক্ষত কোনো পরিস্থিতির সম্মুখিন যাতে না হতে হয় সেই প্রত্যাশাই রইল। ইদের আনন্দ শুধুই স্বস্তি ও আনন্দের হোক।