আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বেড়েছে

আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০১৬, ১০:৫৯ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক
নতুনদেরও জায়গা দেয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়াতে গঠনতন্ত্র সংশোধন করেছে আওয়ামী লীগ।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের আকার বাড়িয়ে ৭১ থেকে ৮১ সদস্যের করা হয়েছে। সভাপতিম-লীর সদস্য সংখ্যা চারজন, সদস্য সংখ্যা দুইজন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যা একজন করে বাড়ানোর প্রস্তাব পাস হয়েছে।
সেই সঙ্গে জাতীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা ১০ জন বাড়িয়ে ১৮০ জন করা হয়েছে।
এছাড়া জেলা, মহানগর, ওয়ার্ড, থানা, পৌর ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ও গঠনতন্ত্র সংশোধনীতে এসেছে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে ২০তম কাউন্সিল অধিবেশনে গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রস্তাব  উপস্থাপন করেন গঠনতন্ত্র উপ-পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক।
পরে কাউন্সিলরদের কাছে সংশোধনী প্রস্তাব ভোটে দেন সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিক্রমে গঠনতন্ত্র সংশোধনী পাস হয়।
আগামী কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত গঠনতন্ত্রের কোনো সংশোধনী এলে তা কার্যকরের জন্যও কাউন্সিলরদের কাছ থেকে প্রস্তাব পাস করে নেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের অঙ্গীকারের অনুচ্ছেদেও কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও সকল প্রকার সাম্প্রদায়িকতার বিলোপ সাধন’র জায়গায় সাম্প্রদায়িকতার পাশে ‘মৌলবাদ’ শব্দটি যুক্ত হবে।
আর ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ: সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠন’ লাইনে সন্ত্রাসের আগে ‘জঙ্গিবাদ’ শব্দটি বসবে।
গঠনতন্ত্রের ২নম্বর ধারায় ‘বিশেষ করে অটিস্টিক শিশুদের আনুকূল্যে বিশেষ সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা’ প্রসঙ্গ সংযুক্ত করা হয়েছে সংশোধনীতে।
গঠনতন্ত্রে নতুন ধারা সংযোজন করে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে ‘স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড’ গঠনের প্রস্তাব পাস হয়।
এ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়, ১৯ সদস্যের এই বোর্ড কাউন্সিলরদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হবে এবং দলের সভাপতি পদাধিকার বলে বোর্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সদস্য সচিব হবেন।
শেখ হাসিনার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়া এই বোর্ডে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কাজী জাফরুল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, রাশিদুল আলম, মোহাম্মদ নাসিম, মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দীপু মণি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ফারুক খান ও ড. আব্দুর রাজ্জাকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত ভেঙে প্রার্থী হলে সরাসরি দল থেকে বহিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে একটি প্রস্তাবে।

কেন্দ্রীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা কাউন্সিলর থাকলেও জেলা সম্মেলনে জেলা কমিটির এবং থানা কাউন্সিলে থানা কমিটির নেতাদের কাউন্সিলর থাকার বিধান আগে ছিল না।
গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে জেলা সম্মেলনে জেলা কমিটির সদস্যদের কাউন্সিলর এবং থানা সম্মেলনে থানা কমিটির সদস্যদের কাউন্সিলর করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
গঠনতন্ত্রের ৪৯ নম্বর ধারায় দলের তহবিল পরিচালনা অংশের শেষে ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল এবং নির্বাচন কমিশনে আয়-ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাখিল করা হবে’- যুক্ত করা হয়েছে সংশোধনীতে।
সংশোধনী উপস্থাপনের সময় উপ-পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “এর আগেও সংশোধন হয়েছে। প্রতিটি সম্মেলনই আওয়ামী লীগের জন্য একেকটি মাইলফলক।
“২০তম সম্মেলন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে এসে আমরা দলকে আরও আধুনিক, যুগোপযোগী ও সময়োপযোগী করতে চাই। আর পরিবর্তিত ও গতিশীল করতে চাই।”
কাউন্সিলে দলের সংসদীয় বোর্ডের নামও ঘোষণা করেন সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
এই বোর্ডের সদস্যরা হলেন- শেখ হাসিনা, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কাজী জাফরুল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ওবায়দুল কাদের, ড. আলাউদ্দিন আহমেদ ও রাশিদুল আলম।
কাউন্সিল অধিবেশনে ঘোষণাপত্র উপ-পরিষদের আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম ঘোষণাপত্র এবং কোষাধ্যক্ষ এন এইচ আশিকুর রহমান আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। কাউন্সিলদের ভোটে সেগুলো পাস হয়।- বিডিনিউজ