আগামী ২৯ মে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে লড়ছেন ঢাবির ছাত্রনেতা ফারুক

আপডেট: মে ২৪, ২০২৪, ১০:০০ অপরাহ্ণ


নাটোর প্রতিনিধি:


নাটোরের ৭টি উপজেলার মধ্যে ৩য় বৃহত্তম উপজেলা বড়াইগ্রাম । বড়াইগ্রাম উপজেলার নামকরণ সম্বন্ধে নির্দিষ্ট কিছু না জানা গেলেও। এ উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বড়াল নদীর দুটি শাখা। উপজেলার অধিকাংশ গ্রামই বড়াল নদীর দুই ধারে অবস্থিত এ কারণে একে বড়াল গ্রাম বলা হতো। কালক্রমে বড়াল নদী থেকেই বড়াইগ্রাম নামের উৎপত্তি হয়েছে। আর সেই বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এউপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২লক্ষ ৩৮ হাজার। ৩য় ধাপে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে মোট ৫ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এরা হলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রিয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল হাসান ফারুক, সুদান প্রবাসী আনিসুর রহমান আনিস, বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, সাবেক ছাত্রনেতা জামাল উদ্দিন আলী, বড়াইগ্রামে আঞ্চলিক রাজনীতির ক্ষেত্রে এই উপজেলা নির্বাচনে শরিফুল হাসান ফারুক অনেকটা এগিয়ে আছেন বলে মনে করেছেন, নবীন-প্রবীন রাজনৈতিক নেতা কর্মি এবং সাধারণ ভোটাররা। তাদের মতে বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজনীতি মূলত দুইভাগে বিভক্ত। এক হচ্ছে বনপাড়া কেন্দ্রিক অপরটা বড়াইগ্রাম উপজেলার কেন্দ্রিক। বড়াইগ্রাম কেন্দ্রিক একক ভাবে রয়েছেন শরীফুল হাসান ফারুক আর বনপাড়া কেন্দ্রিক আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী, মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, জামাল উদ্দিন আলী, আনিসুর রহমান আনিস, এই ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার পূর্বাঞ্চল জোনাইল, নগর, বড়াইগ্রাম ইউনিয়ন এবং বড়াইগ্রাম পৌরসভা থেকে শুধু ফারুক একক প্রার্থী। যার কারণে আঞ্চলিকতার একটা টান বা প্রভাব এই অঞ্চলের ভোটারদের মধ্যে রয়েছে।

নবীন-প্রবীন রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের পাশাপাশি এই অঞ্চলের সুশীল সমাজ, নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবী মানুষ শরিফুল হাসান ফারুকের পক্ষে এক জোট হয়ে কাজ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্ররা, ঢাকায় অবস্থানরত এবং প্রবাসী থাকা বড়াইগ্রামের উল্লেখযোগ্য একটা অংশের মানুষ ফারুকের সমর্থনে কাজ করছেন। তাছারা এবার কোন দলীয় প্রতীক বা প্রার্থী না থাকার কারণে দ্বি-পক্ষীয় বলয়ের বাইরে গিয়ে মানুষ আঞ্চলিকতার টানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্র নেতা ফারুককে বেছে নিয়েছেন বলে এমনটাই বলছেন বড়াইগ্রাম পূর্বাঞ্চল মানুষ ।

এবিষয় স্থানীয় তিরাইল গ্রামের বাসিন্দা ও বিটিভির আইসিটি বিষয়ক অনুষ্ঠান নির্মাতা, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আব্দুর রশিদ বলেন, ফারুক অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় অনেক ভালো। গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের থেকে সে কিছুটা আলাদা প্রকৃতির । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দীন হল শাখার ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদের মাধ্যমে শরিফুল হাসান ফারুকের রাজনৈতিক জীবন শুরু । এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

নগর ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামের কৃতি সন্তান বর্তমানে ঢাকায় বসবাসকারী পূবালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র শাহীন শাহরিয়া বাবুল বলেন, ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা, উচ্চ শিক্ষিত, সৎ, ধীরস্থির, অত্র অঞ্চলের নবজাগরনের প্রতীক হিসেবে মোঃ শরিফুল হাসান ফারুক এসেছে । ফারুক জয়যুক্ত হলে সন্ত্রাস এবং মাদকমুক্ত উপজেলা উপহার দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।

বড়াইগ্রাম শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নারায়ণগঞ্জের প্রো-এ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রাশিদুল ইসলাম জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলামেলা বাতাস আর মধুর ক্যান্টিনের রাজনীতি করে বেড়ে উঠা ফারুক, টিএসসি এবং রাজপথ কাঁপিয়ে তার নিজ এলাকায় ফিরে এসেছে। রাজধানীর গাড়ি, বাড়ি আর বিলাসী জীবনের সাথে সরকারি চাকুরীর কোন মোহই তাকে কাছে টানতে পারে নাই। এসব মোহ দুপায়ে মাড়িয়ে মা, মাটি ও মানুষের কল্যাণে এবং স্মার্ট গ্রামীণ জীবন বিনির্মাণে সে তিনি প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। সে যদি উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান হিসেবে নির্বাচিত হতে পারে তাহলে বড়াইগ্রামের অবহেলিত, নিপীড়িত মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উন্নয়নে সে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এব্যাপারে শরিফুল হাসান ফারুক জানান, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় পড়ুয়া অবস্থায় বিভিন্ন হলের বন্ধুদের সাথে আলোচনা, গল্প হত। ওই সময় বন্ধুরা তাদের নিজ নিজ এলাকার নাম ও পরিচয় দিয়ে তাদের জনপ্রতিনিধি, বড় বড় রাজনৈতিক নেতা, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং প্রতিষ্ঠানের গুরুপূর্ণ ব্যক্তিদের অবদান ও উন্নয়নের কথা বলতেন, তখন তাদের কথা শোনে আমার মন খুব খারাপ হত। আমি চুপ-চাপ থেকে সেসব কথা শোনতাম আর মনে করতাম, একদিন সে নিজেই এলাকায় রাজনীতি এবং জনপ্রতিনিধিত্ব করবেন। সেই আশা সেই স্বপ্ন পূরনের জন্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেও এখন পর্যন্ত তিনি কোন চাকুরীর জন্য আবেদন করেন নাই। উন্নয়ন বঞ্চিত ও এলাকার খেটে খাওয়া মানুষের জন্য তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন। ভোটে নির্বাচিত হতে পারলে, শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন। এছারা প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যায়ে তিনি নিজেকে উৎস্বর্গ করবেন মনে করেন এই তরুণ ছাত্র নেতা।

উল্লেখ্য শরিফুল হাসান ফারুক এই প্রথম বারের মত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়াম্যান পদে মোটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তিনি নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার অন্তর্গত বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের তারানগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১০ এবং ২০১১ সালে বিএসএস (সম্মান) এবং এমএসএস ডিগ্রী অর্জন করেচেন। তার পিতা প্রয়াত আব্দুস সাত্তার (প্রাং) নাটোর জেলা স্বাস্থ্য ইন্সপেক্টর পদে সুনামের সাথে চাকরি করতেন। মা শামীমা খাতুন নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার নাড়িবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন।