শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
বিশ্বের সব দেশের নজর এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে। আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও মূল লড়াই হবে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। রোববার প্রচারণার শেষ দিনে ব্যস্ত সময় কাটান কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই ধারণা।
জরিপ অনুযায়ী, উভয় প্রার্থীই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে আছেন। ৬০ বছর বয়সী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা নারীদের মধ্যে শক্তিশালী সমর্থন পাচ্ছেন। আর ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশেষ করে পুরুষ হিস্পানিক ভোটারদের সমর্থন লাভ করছেন।
রয়টার্স/ইপসস জরিপ অনুযায়ী, ভোটাররা উভয় প্রার্থীকেই নেতিবাচকভাবে দেখছেন। তবে তাতে ভোটদানে ভাটা পড়েনি। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার ইলেকশন ল্যাব অনুসারে, ইতোমধ্যেই ৭৮ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন। এই সংখ্যা ২০২০ সালের মোট ১৬০ মিলিয়ন ভোটের প্রায় অর্ধেক। ওই বছর ভোটার উপস্থিতি শতাব্দীর মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সুইং স্টেটগুলো। এসব রাজ্যে প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় এবং সেগুলোর ফলাফল আগে থেকে অনুমান করা অনেক কঠিন।
সুইং স্টেটগুলোতে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভেনিয়া এবং উইসকনসিনে জয় পাবে রিপাবলিকানরা।
হোয়াইট হাউসে জয়ী হওয়ার জন্য কে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট পাবে তা নির্ধারণ করবে এই সাতটি সুইং স্টেট। এই স্টেটগুলোর মোট ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট সংখ্যা ৯৩।
২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নানা দিক থেকেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। ইউক্রেন থেকে গাজার যুদ্ধ পরিস্থিতি, চিন ও ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বিশ্বের সামরিক শক্তির নিয়ন্ত্রণ-সহ একাধিক বিষয়ের ভবিষ্যত কী হবে, তা নির্ভর করবে এই নির্বাচনের ফলাফলের উপর। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প অথবা ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিসের জয়ের ভিত্তিতে এলোমেলো হয়ে যেতে পারে সমস্ত সমীকরণ। ভিন্ন খাতে বইতে পারে বিশ্বের একাধিক ঘটনাপ্রবাহ। মঙ্গলবার নির্বাচন, লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। নির্বাচনী সমীক্ষা অনুযায়ী, টানটান যুদ্ধে খানিকটা এগিয়ে ডেমোক্র্যাট কমলা হ্যারিস। তবে ‘সুইং স্টেট’ বা খাঁটি শ্বেতাঙ্গ ভোটের জোরে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলেও ধারণা।
তবে এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, যুক্তরাষ্ট্র একজন নারীকে সে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তুতি আছে কি? বাহ্যত এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক বা বিভেদ আছে এমনটি বলা যায় না। কিন্তু দেশটিতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে নারীর প্রশ্নে কোথাও যেন একটা সমস্যা আছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে হিলারী ক্লিনটনের জয়ের ব্যাপারে সারা বিশ^ আশাবাদী ছিল, কিন্তু চূড়ান্ত বিবেচনায় সেটা হয় নি। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তেমনই ফলাফল অসম্ভব কিছু নয়। তবে ফলাফল পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।