সোনার দেশ ডেস্ক:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দলের প্রধান হিসেবে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শেখ হসিনা।
এরআগে সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় সংসদভবনে শপথ নেবেন। তারপর বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথ হবে।’
বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার শপথ আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, “আমাদের তো প্রস্তুতি আছেই। তালিকা পেলেই আমরা কার্যক্রম নেব। যারা মন্ত্রী হবেন, তাদের সঙ্গে সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় কথা বলবেন। দাওয়াত দেবেন, তারপর যেতে হবে বঙ্গভবনে।’
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন মঙ্গলবার বিকালে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা পেলেও কারা শপথ নেবেন, এখনো সেই তালিকা তিনি পাননি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নির্বাচন হওয়ার পরে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্যগণ শপথ নেবেন। সেই প্রেক্ষিতে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। ঐতিহ্যগতভাবেই শপথ অনুষ্ঠান বঙ্গভবনে হয়ে থাকে। আমরা সন্ধ্যা ৭টায় শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এবার কারা মন্ত্রী হচ্ছেন এবং কত সদস্যের মন্ত্রিসভা হচ্ছে জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এই কাজটা আমরা এখনও শুরু করিনি। শপথ অনুষ্ঠানের জন্য গাড়ি রেডি আছে, আমরা তেরো, চৌদ্দশোর মত (অতিথিকে) দাওয়াত দেব।’
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে রোববার ভোট হয়েছে ২৯৯ আসনে। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রে ফল স্থগিত থাকায় ময়মনসিংহের একটি আসনের ফল আটকে আছে। ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২২, জাতীয় পার্টি ১১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, জাসদ ১, কল্যাণ পার্টি ১ এবং ৬২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয় লাভ করেছেন।
গেজেট প্রকাশের পর তা সংসদ সচিবালয়ে পাঠাবে ইসি সচিবালয়। বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে নবনির্বাচিত এমপিদের শপথ অনুষ্ঠান হবে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রথমে নিজে দ্বাদশ সংসদের এমপি হিসেবে শপথ নিবেন। পরে তিনি অন্য এমপিদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।
একাদশ সংসদের প্রধান হুইপ ও আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সেক্রেটারি নূর ই আলম চৌধুরী জানান, বুধবার সকাল ১০টায় শপথ অনুষ্ঠানের পর বেলা ১২টায় প্রথম বৈঠকে বসবে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল।
এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাবেন। এরপর বঙ্গভবনে হবে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ।
একাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর, এরপর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি শপথ নেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। সেদিনই রাষ্ট্রপতির সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান।
৭ জানুয়ারি বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে শপথ পড়ান তখনকার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তার আগের দিনই সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেয়া হয় মন্ত্রিসভায় কারা স্থান পাচ্ছেন, কাকে কোন দপ্তরের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। শপথের আগে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা সেবারই প্রথম।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা পাবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সে অনুযায়ী নতুন মন্ত্রিদের শপথের জন্য আলাদা আলাদা ফোল্ডার প্রস্তুত করতে হবে।
মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীদের চালকসহ সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা দেয়ার দায়িত্ব সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপ-মন্ত্রী গত পাঁচ বছর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তাদের মধ্যে টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করেন।
তথ্যর্সূত্র: বিডিনিউজ