মাহী ইলাহি:
আগামী ২১ শে জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। সরাসরি পায়ে হেঁটে যেমন প্রচারণা চালাচ্ছেন, তেমনি অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন আধুনিক প্ল্যাটফরমে প্রচারণায়। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়নের চিত্র নিয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমেও সরব রয়েছেন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকরা।
রাসিক নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটারদের নিজেদের পক্ষে টানতে বিভিন্ন ইতিবাচক দিক তুলে ধরে ফেসবুক, ইউটিউবকে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রচারনার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে। কোনো এলাকায় কখন গণসংযোগ করছেন সেটাও প্রার্থী ও সমর্থকরা পোস্ট দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষায় তৈরি করা বিভিন্ন গান দিয়েও চলছে প্রচারণা। গানকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থীদের বিভিন্ন ইতিবাচক দিক তুলে ধরে ভোটারদের আকর্ষণের চেষ্টা চলছে।
প্রচারনার প্রচলিত ধারণার বাইরে এবার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারনা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে বেছে নেয়া হয়েছে প্রচারনার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে। শুধু ফেসবুক বা ফেসবুক পেজ নয়, ওয়েবসাইট, ইউটিউবে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতিমূলক ভিডিও দেয়ার মাধ্যমে চালানো হচ্ছে প্রচারনা। এবার মূল ভোটারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ৩০ হাজার তরুণ ভোটার। তরুণ ভোটারদের নিজেদের পক্ষে টানতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুব বেশি কার্যকরি বলে মনে করছেন প্রার্থীরা।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারনায় সবচেয়ে এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজ থেকে বিগত সময়ের উন্নয়নের চিত্র ও প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হচ্ছে। এছাড়াও ইউটিউবে গান দিয়ে তৈরি উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রচার করছেন।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নিবার্চনী প্রচার কমিটির আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক বলেন, দেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। গণসংযোগ, পোস্টার-ফেস্টুন যেমন প্রচারণা একটি পার্ট, ঠিকই তেমনই সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারনার আরেকটি পার্ট। বিভিন্ন পেজ ও আইডি থেকে প্রচারনা অংশ নেয়া হচ্ছে। শিক্ষিত মানুষ ও তরুণদের আকৃষ্ট করতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে।
কাউন্সিলর প্রার্থী চৌধুরী সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, গণসংযোগের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলো হয়তো আর সেভাবে কেউ গণসংযোগ করবে না বলে আমার ধারণা। দেশও এগিয়ে যাচ্ছে, আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি। অন্য দেশের মতো এই দেশেও ডিজিটাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইলেক্ট্রনিক্স-প্রিন্ট মিডিয়া, বিশেষ করে ফেসবুকে প্রচারনায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কাউন্সিলর প্রার্থী বেলাল আহম্মেদ বলেন, একটা সময় রাজনীতি হতো রাজপথে। দীর্ঘদিন রাজপথের আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলাম। সময়ের সাথে সাথে নির্বাচনেও ভিন্নতা এসেছে। এবার সাামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ প্রচার হচ্ছে। এই প্রচারণায় খুব সাড়া পাচ্ছি।
এবার পরিবেশবান্ধব নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী। যে কারণে অনেকে অল্প করে পোস্টার ছাপিয়ে ছিলেন। সেজন্য প্রচারনার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে।
শুধুমাত্র প্রচারনা দেখে নয়; যারা সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন তাদেরকে চান ভোটাররা। এবারের নতুন ভোটার নাবীল হোসেন বলেন, যে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকবে আমি তাকেই ভোট দিবো। সব প্রার্থীই তো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। দেখে শুনে বুঝে ভোট দিতে হবে।
আরেক ভোটার শারমিন স্বর্ণা বলেন, এবারেই প্রথম ভোট। বিভিন্ন প্রার্থীদের দেখছি ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারনা চালাচ্ছেন। প্রার্থীদের এমন প্রচারনা দেখতে বেশ ভালোই লাগছে। ভোটও ডিজিটাল মাধ্যমে হলে ভালো হতো।