আনসার সদস্যকে ঘুষি মেরে হত্যা II আটক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহীতে ঘুষি মেরে আনসার-ভিডিপির সদস্য মাইনুল ইসলামকে (৪৫) হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আটক এক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজাতে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়।

ঘুষি মেরে হত্যায় গ্রেফতার ওই শিক্ষার্থীর নাম তানভীর ইসলাম (১৭)। তিনি রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার খেতাবেরপাড়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে এবং রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র। পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তবে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ মল্লিক।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে মাইনুলকে ঘুষি মারা হয়। ঘটনার সময় ছিলেন আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ডিউটির সময় তাদের ইনচার্জ হিসেবে ছিলেন রেলওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু শাহাদত। পিসি দেলোয়ার হোসেন ও এসআই আবু শাহাদত স্টেশনের ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছিলেন।

এখানে কয়েকজন তরুণকে অস্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে এসআই শাহাদত তাদের চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে এসআইয়ের সঙ্গে তর্কে জড়ায় ওই তরুণরা। এক পর্যায়ে তারা গালাগালও শুরু করে। তখন এসআই শাহাদাত এ বখাটেদের ধরার জন্য আনসার সদস্যদের নির্দেশ দেন। এরপর ওই তরুণরা স্টেশনের ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে পালানোর সময় আনসার সদস্যরা তাদের ধরতে যান। তখন আনসার সদস্য মাইনুল ইসলামের বুকে ঘুষি মারে পলিটেকনিক শিক্ষার্থী তানভীর ইসলাম।

এতে মাইনুল ইসলাম পড়ে যান। আর অন্য আনসার সদস্যরা তানভীরকে ধরে ফেলেন। ঘটনার পর মাইনুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে তার ইসিজি করা হয়। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে নিহতের স্ত্রী আলম আরা বেগম বাদী হয়ে তিনজনের নামে রাজশাহী গভার্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অন্যদিকে দুপুরের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর হয়। নিহত মাইনুল ইসলামের ভগ্নিপতি মো. আলাল বলেন, মাইনুলের দুটি ছেলে আছে। তারা পড়াশোনা করছে। তবে উপার্জন করার মত তাদের আর কেউ নেই। তার সংসারটা ভেঙে গেল। যেহেতু তিনি কর্তব্যরত অবস্থায় খুন হয়েছেন, তাই বাহিনী কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারটিকে সার্বিক সহযোগিতা করা জন্য দাবি জানাচ্ছি।

রাজশাহী জিআরপি থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোপাল কুমার কর্মকার বলেন, আনসার সদস্য নিহতের ঘটনায় জিআরপি থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আটক যুবককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ