শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আজ আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস।
জাদুঘর এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে। জাদুঘরে বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বস্তুসমূহ সংগ্রহ করে সংরক্ষিত করা হয় এবং তা ডিসপ্লে কেসে রেখে জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয়।
প্রতিবছরই একটি স্লোগান সামনে রেখে এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়, যাতে ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক এবং পণ্ডিত ব্যক্তিদের গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং বিশ্ব নাগরিকরা জাদুঘর ও তার আপন ঐতিহ্য সম্পর্কে ভাবতে শেখে।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামস (ওঈঙগ)-এর আহ্বানে ১৯৭৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আইসিওএম। এর সদস্য হিসেবে বর্তমানে ১০৭ দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর যুক্ত রয়েছে।
জানা যায়, এ উপমহাদেশে জাদুঘরের ধারণাটি এসেছে ব্রিটিশদের মাধ্যমে। ভারতীয় এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্যগণ এই অঞ্চলের জাতিতাত্ত্বিক, প্রত্নতাত্ত্বিক, ভূ-তাত্ত্বিক এবং প্রাণিবিষয়ক নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যাপারে উদ্যোগী হন। লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস, যিনি এশিয়াটিক সোসাইটির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন, তিনি কলকাতার পার্কস্ট্রিটে জমির ব্যবস্থা করেন। ১৮০৮ সালে সেখানে জাদুঘরের জন্য ভবন নির্মাণ শেষ হয়। এই প্রক্রিয়ায় ১৮১৪ সালে উপমহাদেশের প্রথম জাদুঘর ‘এশিয়াটিক সোসাইটি মিউজিয়াম’ -এর জন্ম ও প্রতিষ্ঠা হয়।
আর ১৯১০ সালের এপ্রিলে দিঘাপতিয়া রাজপরিবারের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় শরৎকুমার রায়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর’ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এটি নির্মাণ শেষ হয় ১৯১৩ সালে।
বাংলাদেশে শতাধিক জাদুঘর আছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরই দেশের প্রধান জাদুঘর হিসেবে বিবেচিত। জাতীয় জাদুঘরে সংগৃহীত নিদর্শন সংখ্যা প্রায় এক লাখ।
আট একর জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর শুধু একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপনাই নয়, পরিপূর্ণ সংরক্ষণশালাও। চারতলা জাদুঘর ভবনের ২০ হাজার বর্গমিটারজুড়ে রকমারি নিদর্শন প্রদর্শনের ব্যবস্থা। বাংলার ইতিহাসের ধারাবাহিক উপস্থাপন অতীত হতে বর্তমান পর্যন্ত ঘটনা-পঞ্জি ইতিহাসের স্মারকের সাথে যা আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়।