নিজস্ব প্রতিবেদক
কখনো উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘনকুয়াশা। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশার আবরণে পথঘাট ঢাকা থাকছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যও কমেছে। এতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আবার দুপুরের দিকে সূর্যের উত্তাপ গত কয়েকদিনে বেড়েছে। আবার বিকেলের পর হঠাৎ করেই শীত পড়তে শুরু করছে।
আবহওয়ার এই খামখেয়ালিপনায় হাসপাতালে রোগী বেড়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এরমধ্যে শিশু ও বয়স্করাই বেশি ভুক্তভোগী হচেছন। বিপাকে শ্রমজীবীরাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালেও রোগীর চাপ বেশি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের দেওয়া তথ্য মতে, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রামেক হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ছিলো ৮৩ জন। এরমধ্যে শিশু ৪৬ জন এবং অন্যান্য ৩৭ জন। এদিন ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৮৭৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে অধিকাংশই শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
বর্তমানে রামেক হাসপাতালে শয্যা সংকটের কারণে অনেক রোগীকে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতে পা ফেলার জায়গা নাই।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শঙ্কর কে বিশ্বাস বলেন, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শীতে অনেকটাই বাড়ে। তবে এখন জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যার চেয়ে বহির্বিভাগে রোগীর চাপ বেশি। শীতে বেশিরভাগই ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভোগেন। এই সময়ে যে কেউ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এসব রোগ থেকে রেহাই পেতে গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি। শিশুদের ঠান্ডা বাতাস থেকে দূরে রাখা, সেইসঙ্গে ধুলোবালু থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে শিশুদের ঘর থেকে কম বের করতে হবে। ঘরের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস যেন না ঢোকে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে অভিভাবকদের।
রাজশাহী ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোসা. মাহবুবা খাতুন বলেন, উপজেলা পর্যায়ে সর্দি-কাশির মতো সাধারণ শারীরিক জটিলতা নিয়ে ভর্তি রোগী বেড়েছে। আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। তবে এখন পর্যন্ত স্বস্তির বার্তা হলো নিপা ভাইরাসের আক্রামণে কেউ আক্রান্ত হয় নি। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
রাজশাহী আবহওয়া অফিসের জৈষ্ঠ্য পর্যবেক্ষক রহিদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন ১৪ এবং সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন সকাল ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ। আর সন্ধ্যা ৬টায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৬ শতাংশ। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় শীতের অনুভূত বেশি।