বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
পর্যটক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের দাবির মুখে দীর্ঘ সময় পর নান্দনিক রূপ পেয়েছিলো নগরীর পদ্মাপাড়ের লালনশাহ্ পার্ক। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তথ্য বলছে, প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে চার বিঘা জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে লালনশাহ পার্ক। নান্দনিক সে সৌন্দর্যের প্রশংসা ছড়িয়েছে দেশজুড়ে।
সম্প্রতি আবারও গরু-ছাড়লের দখলে লালনশাহ্ পার্কটি। পুরো পার্কটি পরিণত হয়েছে গরুর খামারে। সন্ধ্যার পর সেখানে বসছে মাদকের আসরও। যা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন দর্শনার্থীরা।
জানা যায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরের লালন শাহ্ পার্কটি বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সে বেড়ার কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ভেতরে দোকানের জন্য যে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে উঠতি বয়সী ছেলেরা মাদক সেবন করছে দেদারসে। ভেতরের নান্দনিক কোন সৌন্দর্যই আর অবশিষ্ট নেই। পাশে ওয়াকওয়েতে পড়ে থাকছে গরু-ছাগলের বিষ্টা। দর্শনার্থীরা গন্ধে নাকে হাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
দর্শনার্থীরা বলছেন, তিন বছর আগেও এই জায়গাটি খুবই খারাপ ছিলো। একরকম ভাগাড় ছিলো। নগরীর মূল পর্যটনকেন্দ্রের এই বেহাল দশায় জনপ্রতিনিধিরাও লজ্জায় পড়তেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভয়ে পরিবর্তনের সাহস করতেন না। তবে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও দর্শনার্থীদের চাপের মুখে রাসিক এটাকে উদ্ধার করে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে। কয়েকবছর ভালোই ছিলো। কিন্তু আবারও এটি ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে নজর দেয়ার আহ্বান তাদের।
বন্ধুদের নিয়ে এ পার্কে বেড়াতে এসেছিলেন সজিবুল ইসলাম। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, হঠাৎ করে এসে লালনশাহ্ পার্কের এই বেহালদশা দেখবো ভাবি নি! এটা সত্যিই বিশ্বাস হচ্ছে না। নগরীর প্রাণ কেন্দ্রের একটি স্থাপনা এভাবে আবারও ভাগাড় হয়ে যাবে এটা মেনে নেয়া যায় না।
সূত্র জানায়, ওই সময় পার্কে ১ হাজার ১৩২ বর্গমিটার আয়তনের একটি ওপেন থিয়েটার, একটি ফুডকোট, ৮২ দশমিক ৮১ বর্গমিটারের দুটি কফিশপ ও ২ হাজার ৫৫৮ দশমিক ৮৫ বর্গমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দোকানগুলো চালু করা যায় নি। এখন এ দোকানগুলো গরু-ছাগলের খোয়াড় ও মাদকের আড্ডাখানা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। দ্রুততম সময়ে ওই জায়গাটি দখলমুক্ত করে সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হবে।