মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
বাজার ব্যবস্থাপনা হতে হবে শক্তিশালী
সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীরা অজুহাত দাঁড় করিয়ে বাড়িয়ে দিচ্ছেন নিত্যপণ্যের দাম। এতে করে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে ক্রেতাদের। আলু ও ডিমের যে দর সরকার বেঁধে দিয়েছিল কোনো কোনো জেলায় তা আজও কার্যকর করা যায়নি। তবে সরকারের বেঁধে দেওয়া ডিমের দাম কিছুটা হলেও রাজশাহীর বাজারে দুই থেকে তিন টাকা কমেছিল। কিন্তু সরকার আবারো ডিমের আমদানির ঘোষণা দেওয়ায় গরমের অজুহাত দেখিয়ে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) থেকে বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের ও খামারিদের দাবি প্রচুর পরিমাণ ডিম আমদানি হয়ে স্থানীয় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এমনটায় গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এছাড়াও গত কয়েকদিনের বৃষ্টির পর বেড়েছে আরও কিছু সবজির দর। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অভিযান চালাচ্ছে। কোথাও কোথাও তারা সরকার নির্ধারিত দরে পণ্য বিক্রি করতে ব্যাবসায়ীদের বাধ্য করছে। তবে এতে সুফল মেলেনি। ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আলু আমদানির কথাও ভাবা হচ্ছে। তবে কৃষি মন্ত্রণালয় আলু আমদানির বিপক্ষে। এর আগে কৃষি মন্ত্রণলায় পেঁয়াজ আমদানিতে শুরুতে রাজি ছিল না। পরে বাজার নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে তারা রাজি হয়।
সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণের কাজে সমন্বয় আছে কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে। নইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিতে দেখা যায় কেন। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর সীমিত পরিসরে আলু আমদানির সুপারিশ করেছে। তবে তারা সুপারিশ করলেই যে আলু আমদানি করা যাবে তা নয়। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত লাগবে।
গত কয়েক সপ্তাহ রাজশাহীর বাজারে ডিমের দাম কিছুটা কম থাকলেও আবার বেড়েছে। হালিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে ডিমের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে ডিমের উৎপাদন কমেছে। একারণে দাম বেড়েছে। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) নগরীতে সাদা ডিম খুচরা পর্যায়ে ৪৬ ও লাল ডিম ৪৮ টাকা হালি দরে বিক্রি হয়েছে।
প্রতিদিন ডিমের দাম নির্ধারণ করে থাকে রাজশাহী পোল্ট্রি ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (আরপিডিএ)। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘আরপিডিএ’ নামে তাদের একটি গ্রুপও রয়েছে। গ্রুপে ফলোয়ারের সংখ্যা আড়াই হাজার। যার অধিকাংশই প্রোল্ট্রি ব্যবসায়ী। এই গ্রুপ ও মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে সমিতি থেকে প্রতিদিনের ডিমের দাম জানিয়ে দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণে কতটুকু সক্ষম ও দক্ষ সেই প্রশ্ন রয়েছে। এরপরও সংশ্লিষ্ট সবাই যদি সম্মিলিতভাবে প্রয়াস চালায়। তাহলে নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তি আনা যেত বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। এজন্য তাদের সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। বাজার গবেষণার ভিত্তিতে সুপরিকল্পতিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উৎপাদন ও চাহিদা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা থাকা জরুরি। আমদানিতে ভারসাম্য বজায় রাখা দরকার। উৎপাদন খরচ কমানো যায় কীভাবে সেটা ভেবে দেখতে হবে। বাজার ব্যবস্থাপনা হতে হবে শক্তিশালী। তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ভয়-ভীতি দেখানো বা বল প্রয়োগের প্রয়োজন পড়বে না।