আব্দুল আলীমের জন্মদিন আজ

আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২৪, ১:৩০ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


নাইয়ারে নায়ের বাদাম তুইলা/ কোনো দূরে যাও চইলা, এই যে দুনিয়া/ কিসের লাগিয়া এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে তার। যা মুহূর্তে হৃদয় স্পর্শ করে যায়। এসব গান যার কণ্ঠে শুনে হৃদয় ভরে গেছে তিনি হলেন লোকসংগীতের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আব্দুল আলীম। ১৯৩১ সালের ২৭ জুলাই এ দিনে মরমী এই শিল্পীর জন্ম হয়। আজ শিল্পীর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের তালিবপুর গ্রাম জন্ম গ্রহণ করেন আব্দুল আলীম। বাল্যকাল থেকেই সংগীতের প্রতি প্রবল অনুরাগী ছিলেন তিনি। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় গ্রামোফোন রেকর্ড শুনে গান গাওয়ার আগ্রহ জন্মে তার। ছোটবেলায় তার সংগীত গুরু ছিলেন সৈয়দ গোলাম আলী। অল্প বয়স হতেই বাংলার লোক সংগীতের এই অমর শিল্পী গান গেয়ে সুনাম কুড়ান। ১৯৪৩ সালে মাত্র তেরো বছর বয়সে তার গান প্রথম রেকর্ড হয়। রেকর্ডকৃত গান দুটি হলো ‘তোর মোস্তফাকে দে না মাগো’ এবং ‘আফতাব আলী বসলো পথে’।

পরবর্তীকালে তিনি কলকাতায় যান। সেখানে আব্বাসউদ্দিন ও কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে গান করেন। তিনি লোক ও শাস্ত্রীয় সংগীতের উপর দীক্ষাা নিয়েছেন বেদার উদ্দিন আহমেদ, ওস্তাদ মোহাম্মদ খসরু, মমতাজ আলী খান, আব্দুল লতিফ, কানাই লাল শীল, আব্দুল হালিম চৌধুরী প্রমুখের কাছে। লেটো দলে, যাত্রা দলেও কাজ করেছেন তিনি।

দেশ বিভাগের পর আব্দুল আলীম ঢাকায় চলে আসেন। রেডিওতে স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে গান গাইতে শুরু করেন। পরে টেলিভিশন সেন্টার চালু হলে সেখানেও সংগীত পরিবেশন শুরু করেন তিনি। এ ছাড়াও তৎকালীন বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ সহ বিভিন্ন বাংলা চলচ্চিত্রে আব্দুল আলীম গান গেয়েছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো ‘লালন ফকির’।

সব মিলিয়ে তার প্রায় ৫শ’র মতো গান রেকর্ড হয়েছিল। আব্দুল আলীম তার আধ্যাত্মিক ও মরমী মুর্শিদী গানের জন্য অমর হয়ে থাকবেন।
লোক সংগীতের শিল্পী আব্দুল আলীম বেশ কিছু জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন- তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- পূর্বাণী চলচ্চিত্র পুরস্কার। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার। পাকিস্তান মিউজিক কনফারেন্স, লাহোরে সংগীত পরিবেশন করে আব্দুল আলীম পাঁচটি স্বর্ণ পদক পেয়েছিলেন। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৭ সালে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে সম্মানিত করে।

Exit mobile version