বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সরকার ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেয়ার একদিনের মধ্যে কমতে শুরু করেছে পণ্যটির দাম। রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে মাত্র একদিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম কেজিপ্রতি কমেছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। সংবাদ মাধ্যমের তথ্যমতে, সোমবার (৫ জুন) বাজারটিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। যা রোববারও ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। যদিও খুচরা বাজারে এখনো পেঁয়াজের দাম কমার প্রভাব পড়েনি।
বিষয়টি স্পষ্ট যে, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেশন করেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। পেঁয়াজের মজুদ ঠিকই আছে- শুধু সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা সুনাফা লুটে নেয়া হয়েছে। আর এর নির্মম শিকার হয়েছে দেশের সাধারণ ক্রেতা। অথচ পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বাজারে পেঁয়াজের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির জন্য পেঁয়াজের কম সরবরাহকে দায়ি করে আসছিল। তা হলে পেঁয়াজ আমদানির সরকারি সিদ্ধান্তের একদিন পরেই কীভাবে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে গেল? তদুপরি এই অসাধু ব্যবসায়ীদের কিছুই হবে না। তাদের চিহ্নিত করা হবে না, শাস্তির ব্যবস্থাও হবে না। এমনই করেই নিত্যপ্রয়োজচনীয় দ্রব্যাদির দাম বাড়িয়ে দিয়ে দেশের মানুষকে জিম্মি করা হয়।
মে মাসেও সরকারের পক্ষ থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যাপারে সিদ্ধান্তের কথা বলা হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয় নি। নিশ্চয় ব্যবসায়ীরা এটাকে সরকারের দুর্বলতা হিসেবেই গন্য করেছিল। তারা দ্বিগুণ উৎসাহে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েই যাচ্ছিল। অথচ পেঁয়াজের সঙ্কট বলতে কিছু ছিল না। বাজারে নিয়ন্ত্রিত সরবরাহের মাধ্যমে বাজারকে প্রভাবিত করা হয়।
তবু সরকার শেষ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদারি উদ্যোগ নিয়েছে। বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে ইদ সামনে রেখে পরিস্থিতি যে আরো কঠিন হতো তা বলাই বাহুল্য। পেঁয়াজ উৎপাদন করে দেশের কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য কৃষকের স্বার্থরক্ষায় গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ রাখে সরকার। কিন্তু তাতে করে কৃষকের স্বার্থ কতটুকু সুরক্ষিত হলো আর মতলববাজ ব্যবসায়ীদের স্বার্থ কতটুকু রক্ষা হলোÑ সেটাও মূল্যায়ণ করা দরকার।