মান্দায় আমানত ফেরতের দাবিতে মাল্টিপারপাসের ছয়কর্মী অবরুদ্ধ

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ৮:২১ অপরাহ্ণ


মান্দা প্রতিনিধি:নওগাঁর মান্দায় আমানতের টাকা ফেরতের দাবিতে আল-আমিন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ নামের বেসরকারি একটি সংস্থার ছয়কর্মীকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন গ্রাহকেরা।

আমানত অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে ৩০ ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত ৫৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংস্থার লোকজন। গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে ছয়কর্মীকে দুইদিন ধরে সংস্থার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

অবরুদ্ধ ব্যক্তিরা হলো, সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন, শাখা ব্যবস্থাপক ফারুক রেজা, নজিপুর শাখা ব্যবস্থাপক রাজু আহমেদ, নুর আলম ও মাঠ ব্যবস্থাপক শাহজামাল এবং মাঠকর্মী রিপন।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের দিকে আল-আমিন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামের বেসকারি একটি সংস্থা মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর বাজারে শাখা কার্যালয় খুলে বসে। এর পর চড়া সুদে দৈনিক কিস্তিতে ব্যবসায়ীদের ও সাপ্তাহিক কিস্তিতে গ্রামের নারীদের গ্রুপ পর্যায়ে ঋণ বিতরণ শুরু করে সংস্থাটি।

একই সঙ্গে এফডিআরের মাধ্যমে অধিক মুনাফার প্রলোভন দিয়ে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে সংস্থার কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা। এ ফাঁদে পা দিয়ে ৩০জন ব্যক্তি সেখানে ৫৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। কিছুদিন মুনাফার টাকা সঠিকভাবে দেওয়া হলেও কয়েক মাস ধরে টালবাহানা করা হচ্ছে। সংস্থার প্রধান কার্যালয় নওগাঁর পত্মীতলা উপজেলার নজিপুর নতুনহাট এলাকায়।

সংস্থার এরিয়া ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সঠিক সময়ে আমানতকারীদের মুনাফা দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু সমস্যার কারণে কয়েক মাস ধরে তাদের মুনাফা দেওয়া হয়নি। খুব শিগগিরই এ জটিলতার সমাধান হবে।

এফডিআরের মাধ্যমে এভাবে টাকা নেওয়ার বিধান আছে কি না জানতে চাইলে এরিয়া ম্যানেজার জানান, এফডিআরের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেয়া কোনো বিধান নেয়।
আমানতকারী নয়ন কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘আল-আমিন মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির লোকজন এক লাখ টাকায় প্রত্যেক মাসে দুই হাজার টাকা মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেয়। তাঁদের প্রলোভনে পা দিয়ে আমি নয় লাখ টাকা সেখানে জমা দিয়েছি। এর পর কয়েক মাস আমাকে সঠিক সময়ে মুনাফার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত চার মাস থেকে আর কোনো মুনাফা দেওয়া হচ্ছে না।’

গ্রাহক জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি বিভিন্ন জায়গায় ঝি এর কাজ করি। এক সময় ওই সংস্থাতেও কাজ করেছি। ওই সময় সংস্থার লোকজনের ফাঁদে পা দিয়ে আমার কাছে থাকা ৮০ হাজার ও জামাইয়ের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে জমা দেই। নাতনির বিয়ের প্রয়োজনে টাকা ফেরত চাওয়ায় সংস্থার লোকজন টালবাহানা শুরু হয়। টাকা ফেরত না পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি।’

অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আব্দুল কাদের বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমানতের টাকার মুনাফা না দিয়ে বিভিন্ন সময় অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে সংস্থার লোকজন। তারা গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হতে পারে এমন সন্দেহে সংস্থার লোকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। গ্রাহকেরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।