বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন, অতীতে যদি পবার সাধারণ মানুষের সাথে কোনো নির্যাতন-নিপীড়ন করে থাকে, আমি কথা দিচ্ছি দল-মত নির্বিশেষে এসব কাজ পবার মাটিতে আর হবে না। যদি হয় প্রয়োজনে এমপিত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো, মানুষের ভালোবাসা ছাড়বো না। আমার কাছে এমপি পদের থেকে মানুষের ভালোবাসার দাম বেশি। আমি আপনাদের ভালোবাসা নিয়েই রাজনীতি করতে চাই। যারা এই মাটি ও মানুষের সাথে অন্যায় এবং অপরাধ করেছে, তারা আগামীতে ছাড় পাবে না। পবার বড়গাছি এলাকায় নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি এলাকায় গণসংযোগ ও নির্বাচনী সভা করেন আসাদুজ্জামান আসাদ। ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠ ও দাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত পৃথক নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি।
আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়, শেখ হাসিনা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। সেই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, সে কারণেই সৎ সাহস নিয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। এই ১৫ বছরে কিছু কিছু মানুষ তো খারাপ কাজ করেছে, তার দায় তো আওয়ামী লীগের নয়। সেই দায় সেই সব মানুষের। বড়গাছিবাসীকে পরিষ্কার বলতে চাই, আমি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পথচলা মানুষ। আমার রাজনৈতিক জীবনে কোনো কলঙ্ক নাই। আমি রাজনীতি করি বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। আমার রাজনীতি অর্থ উপার্জনের জন্য নয়, সম্মান উপার্জনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নাকি অসহযোগ আন্দোলন ডাক দিয়েছে। আপনাদের অসহযোগ নিয়ে আমাদের কোনো কথা নাই। আপনার বিবেককে একবার প্রশ্ন করুন, এই ১৫ বছরে আপনি বিএনপি করে কতটা লোকসান করেছেন নাকি লাভ করেছেন! আপনার বিবেক যদি বলে লাভবান হয়েছেন, দয়া করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বকে আর মেনে নিয়েননা।
বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিবেকের উপর প্রশ্ন রেখে আসাদ বলেন, আর কয়েক দিন পরেই জানুয়ারির প্রথম দিন নতুন বই পেয়ে আপনার সন্তানরা যখন আনন্দিত হয়ে বাড়ি ফিরবে, তাদের এই হাসির পেছনে শেখ হাসিনার অবদান আছে। সেই কারণেই আপনার বিবেকের রায়টি নৌকায় চাই। এটি আমাদের হক, সেটা আপনাকে পরিশোধ করার অনুরোধ করতে চাই। যদি বিবেক বলে আপনারা আমাকে ভোট দিবেন, যদি না বলে অন্য যারা আছে তাদেরই দিবেন।
করোনা মহামারীর কথা স্মরণ করিয়ে আসাদ বলেন, করোনাকালীন সময়ে যখন পুরো পৃথিবী অবরুদ্ধ। গোটা বাংলাদেশসহ সমস্ত মসজিদ বন্ধ, পবিত্র কাবা শরিফ বন্ধ, মসজিদে নববীতেও তালা। যদি কোনো বাড়িতে করোনা রোগী পাওয়া যায় সেই এলাকায় লাল পতাকা উড়িয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হতো। পাড়ার মানুষ কাউকে বের হতে দেয় না, সন্তান মরলে পিতা যায় না, পিতা মরলে সন্তানরা এগিয়ে যেতে পারে না। এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে বললেন, সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন। আমি কথা দিচ্ছি, বিজ্ঞানীরা করোনার বিরুদ্ধে ওষুধ আবিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। যেদিন করোনার ওষুধ আবিষ্কার হবে, পৃথিবীর সমস্ত ধনী দেশ সেই ওষুধ পাবে, আমি কথা দিলাম একই সময় ওই ওষুধ বাংলাদেশে নিয়ে আসবো।
পার্থক্য এক জায়গায়, ওরা টাকা নিয়েছে মানুষের কাছে, শেখ হাসিনা ফ্রী দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কথা রেখেছেন। সেই টিকা কি শুধু আওয়ামী লীগের কর্মীরা গ্রহণ করেছে, না ১৮ কোটি জনগণ দিয়েছে? শুধু এক ডোজ, দুই ডোজ, তিন ডোজ নয়, কেউ কেউ চার ডোজও টিকা গ্রহণ করেছেন বিনামূল্যে। তাহলে তো আপনার বিবেকের কাছে আমরা নৌকা প্রতীকে ভোটটি চাইতে পারি।
রাজশাহী জেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক আসাদ বলেন, আপনারা যদি চান বয়স্ক ভাতা, কৃষি উপকরণ, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি চালু থাক সেই কারণেই আপনার বিবেকের কাছে দাবি রেখে গেলাম নৌকা প্রতীকে ভোট দিবেন। পৃথিবীর কোন মুসলিম রাষ্ট্রনায়ক একসাথে ৫০৭টি মডেল মসজিদ তৈরি করতে পারেন নি। আমাদের কথা যদি সত্যি হয়, আর আপনি যদি ধার্মিক মানুষ হোন তবে আপনার বিবেকের রায়টি আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় দিবেন।
আমরা আওয়ামী লীগ করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে চলি, আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী, শেখ হাসিনা আমাকে জাতীয় সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দিয়েছেন, আমার চেয়েও যদি ভালো প্রার্থী থাকে তাকে ভোট দিবেন। কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নাগরিক দায়িত্ব ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানাই।
বড়গাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আব্দুল গাফফারের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আ’লীগের সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান, রাজশাহী জেলা আ’লীগের মহিলা বিষয়ক-সম্পাদক এডভোকেট পুর্ণিমা ভট্টাচার্য, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক ফারুক হোসেন ডাবলু, সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ-সম্পাদক আলি আজম সেন্টু, সাবেক সাংগঠনিক-সম্পাদক মোবারক হোসেন মিলন, পবা উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বড়গাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসাইন সাগর, বড়গাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ-সম্পাদক আজহার আলী তালুকদার, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউর রহমান প্রমুখ।
পবা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমদাদুল হকের সঞ্চালনায় সভায় স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।