আরো চার লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত, মানবিক বিপর্যায়ের প্রতিকার কি নেই?

আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১২:২০ পূর্বাহ্ণ

জানুয়ারিতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি ১৮ মার্চ ইসরায়েল ভেঙে দেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চার লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনোদোলুর প্রতিবেদন অনুযায়ী জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, ১৮ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে কমপক্ষে ২০টি বাস্তুচ্যুতি আদেশ জারি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনি। এ কারণে গাজা উপত্যকার প্রায় ৬৯ শতাংশ ফিলিস্তিনি সক্রিয় বাস্তুচ্যুতি আদেশের আওতায় রয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী গাজায় এখন মানবিক বিপর্যয় চলছে। ইসরায়েলি বাহিনির মুহুর্মুহু মামলায় নারী ও শিশু নিহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। ইসরায়েলি বাহিনি এখানেই থেমে থাকছে না। ছয় সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে কোনো মানবিক সহায়তাসামগ্রী ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এটি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সবচেয়ে দীর্ঘ অবরোধ আরোপের ঘটনা। ফলে ব্যাহত হচ্ছে- খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, আশ্রয় এবং চিকিৎসা সরবরাহ। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি নৃশংস হামলায় ৫১ হাজার ১৫০ ছাড়িয়ে গেছে।
যুদ্ধ বিরতি চুক্তি ভেঙ্গে যাওয়ার পর ১৮ মার্চ থেওেক ইসরায়েলি বাহিনি হামলার পর বিশ^ জুড়েই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা দেয়। বাংলাদেশে এখনও বিক্ষোভ কর্মর্সূচি পালিত হচ্ছে। কিন্তু বিশ^ব্যাপি অপরাপর ঘটনা এতই দ্রুততার সাথে সংঘটিত হচ্ছে যে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়টি অনেকটাই চাপা পড়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন ঘটনা নিয়েই বিশ^ নেতৃত্ব সে দিকেই ধাবিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি ইসরায়েলির জন্য বড় ধরনের সুবিধাও বটে। তারা সেই সুযোগ দক্ষতার সাথে কাজে লাগাচ্ছে। এটাও ঠিক যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ এ ধরনের সুয়োগ ইসরায়েলকে করে দিচ্ছে। এটা অনেকটা দেখে না দেখার ভান।
এর ফলে হামাস আরেকটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরায়েলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এবং বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে সংঘাতের অবসানের জন্য চুক্তির দাবি জানানোর পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এমন অবস্থায় গাজায় আক্রমণ আরো জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে মুসলিম দেশগুলোও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তেমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বর্বর হত্যাযজ্ঞ এক ধরনের উৎসাহ লাভ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজনৈতিক উদ্যোগ খুবই জরুরি। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?

 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ