নিজস্ব প্রতিবেদক:
নগরীতে মৌসুমের দ্বিতীয় ও চৈত্রের প্রথম দিনের বৃষ্টিপাত হয়েছে মুষলধারে। রোববার (১৯ মার্চ) দুপুর বেলা ৩ টার পর বিরতি দিয়ে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরেছে। দীর্ঘ সময় পর এমন বৃষ্টিতে প্রাণ-প্রকৃতিতে সজীবতা ফেরে। চৈত্রের খরতাপের পূর্বের এমন বৃষ্টি আম গুটিসহ কৃষির জন্য আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
আবহওয়া অফিসের তথ্যমতে, এদিন রাত ৭ টা পর্যন্ত ২ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর গত ১১ মার্চ দুপুরে নগরীজুড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছিলো। সেদিন ১ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করেছিলো আবহাওয়া অফিস। এছাড়া রোববার বৃষ্টির শুরু হওয়ার কিছু পরই তাপমাত্রা নিচে নেমেছিলো। এতে কিছুটা ঠান্ডা অনুভব হচ্ছিলো। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ২০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ১১ মার্চ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৩২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মেঘলা আবহওয়ার কারণে তাপমাত্রা অনেকটাই কম বলে মনে করছেন আবওয়াবীদরা।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, গত কয়েকদিন ধরেই আকাশ মেঘলা রয়েছে। রোববার দুপুরের পর কিছু সময় মুসলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এরপর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার (২০ মার্চ) বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর আবহওয়া স্বাভাবিক হতে পারে।
এদিকে, রাজশাহীতে কয়েক বছরের মধ্যে এবার আমবাগানে সবচেয়ে বেশি গুটি এসেছে। এবার রাজশাহীতে ১ হাজার ৬৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষ বেড়েছে। গতবারের তুলনায় এবার প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন ফলন বাড়তে পারে। মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টি নিয়ে অনেকের মধ্যে শঙ্কা থাকলেও কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বৃষ্টি আমের জন্য আর্শীবাদ।
রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বৃষ্টি আম লিচুর জন্য আশীর্বাদ হিসেবে ধরা যায়। তবে লিচুর এখনো কিছুটা মুকুল রয়েছে, সেই কারণে একটু সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়া দ্রুত পরিষ্কার হলে সে সম্ভাবনা টুকুও থাকবেনা। বৃষ্টির ফলে মরে যাওয়ার যে মুকুলের ফুল রয়েছে সেগুলো ঝরে যাবে। এতে করে ভালোভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ জানান, এই বৃষ্টি কৃষির জন্য প্রত্যাশিত বৃষ্টি। যারা আলু তুলছেন, তাদের জন্য কিছুটা দূর্ভোগের হলেও আমসহ অন্যান্য সকল ফসলের জন্য আশীর্বাদ। বিশেষ করে এই সময় বৃষ্টি না হলে গুটি ঝরে যাওয়ার হার বাড়তো। বৃষ্টির কারণে এখন গুটি ঝরবে না।
উল্লেখ্য, এবার রাজশাহী জেলায় ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ করা হয়েছে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর। গতবার আম উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৬ হাজার ১৫৬ মেট্রিক টন। এবার ২ লাখ ২৫ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।