সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
মো. সাজেদুল হক সাজু চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
এতোদিন যাদের ঠিকানা ছিল না, বসবাস করতেন অফিসের বারান্দায় কিংবা সড়কের পাশে, আবার কেউ কেউ রেলস্টেশনেও রাত কাটাতো। এখনতারা স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়ে মহাখুশি। এছাড়া ঘরের পাশাপাশি মাছ চাষের জন্য পুকুর, সবজির চাষের জমি পেয়েছেন। এখন তারা ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন দেখছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। উপহারের বাড়ির দলিলনামা পেয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন আশ্রয়হীন পরিবার গুলো। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপহারের বাড়ি পেয়েছেন ৪ হাজার ৮১৯ পরিবার।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ (এমপি) বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জন নেত্রী শেখ হাসিনা কথা নয় কাজে বিশ্বাসী। গত ১৪ বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় সকল ক্ষেত্রে যে পরিমান উন্নয়ন হয়েছে তা অতিতের কোন সরকার করতে পারেনি।চর অঞ্চলসহ বিভিন্ন উইনিয়নে প্রায় ৩শ কিলোমিটার পাকা সড়ক, স্কুল ভবন, কলেজ ভবন, মাদ্রাসা ভবনসহ আধুনিক মানের ৫টি মসজিদ নির্মাণ করেছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চতুর্থ ধাপে জেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৭৫ টি, গোমস্তাপুরে৭৫টি, নাচোল ৮০ টি পরিবারকে উপহারের বাড়ি দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপহারের বাড়ি পেয়েছেন ৪হাজার ৮১৯ পরিবার। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৭৮৪, শিবগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার১৮৮ পরিবার, গোমস্তাপুর উপজেলায় ৭৩৩ পরিবার, নাচোল উপজেলায় ৯৯৬ পরিবার ও ভোলাহাটউপজেলায় ১ হাজার ১১৮ পরিবার।গত ২২ শে মাচ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়ে আশ্রয়হীনদের মাঝে মুজিব বর্ষ উপলক্ষেনির্মিত উপহারের বাড়ির দলিলনামা হস্তান্তরের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের২৩০ টি আশ্রয়নহীন পরিবারকে উপহারের বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এই সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকেভূমি ও গৃহহীন ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ নাচোল গোমস্তাপুর ভোলাহাট আসনের সংষদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুহাঃ জিয়াউর রহমান (এমপি) বলেন, বাংলাদেশে ১জন মানুষও গৃহহীন থাকবে না প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপহারের বাড়ি পেয়েছেন ৪ হাজার ৮১৯ পরিবার। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
দূর্লোভপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজিব রাজু জানান, পরিষদের মাধ্যমে গৃহ ও ভূমিহীনদের তালিকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারকার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত ভূমিহীনদের তালিকা চূড়ান্তকরা হয়। দুই শতাংশ ভূমিতে সেমিপাকা ঘরে দুটি শোবার ঘর, বারান্দা, রান্নাঘর ও একটিবাথরুম সংবলিত ঘর বরাদ্দ পায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো।
উপকারভোগী শেফালি খাতুন জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের বাড়ি পেয়ে এখন অনেক ভালো থাকবেন। এখানে শুধুতারা বাড়ি উপহার পাননি। পেয়েছেন মাছ চাষ করার জন্য খাল, সবজি চাষ করার জন্য জমি। এছাড়া বাড়িতে বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ খাবার পানি, পাকা টয়লেট, যা তাদের স্বপ্ন ছিল, আজ প্রধানমন্ত্রী তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার হলরুমে ৭৫ জন আশ্রয়হীনদের মাঝে দলিলনামা হস্তান্তর করেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আনিছুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও রওশন আলী প্রমুখ।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক একে এম গালিব খান বলেন, উপকার ভোগীরা তাকে জানিয়েছেন, প্রধান মন্ত্রী জমি, ঘর, টয়লেট, পানি, পাকা রাস্তা, পুকুর, সবজি চাষের জায়গা দিয়েছেন। আমরা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দীঘার্য়ু কামনা করি।তিনি যেন মানুষের কল্যানে আরও কাজ করতে পারেন।