শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সুজিত সরকার
সাধারণতঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য চার বছর মেয়াদের জন্যে নিয়োগলাভ করেন। অবশ্য ক্ষেত্র বিশেষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে কাউকে তার অধিক সময়ের জন্যে বা পূর্বের প্রশাসনকে পুনঃনিয়োগও দিতে পারেন। এবারই যেমন খুলনা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বের উপাচার্যকে পুনর্বহাল করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর আআসম আরেফিন সাহেবকে তার দায়িত্ব অব্যাহত রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়। অবশ্য সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত হন যাঁরা, রাষ্ট্রপতি মনে করলে তাঁদের মধ্যে থেকে যে কোনো একজনকে কিংবা অন্য কাউকে নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। সেই নিয়োগে রাজনীতিক পরিচয়টাই প্রধান সূত্র। অবশ্য রাজনীতিক পরিচয় পেতে কখনো কখনো নিয়োগকর্তাগণ বিভ্রান্ত হন বা ভুলও করেন। কারণ অধিকাংশ পদলাভকারী যে রাজনীতিক দল রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন, তাদের দলের নেতাদের কল্যাণে (?) পুনর্বাসিত হন অর্থবলে কিংবা তাদের গণতন্ত্র বিরোধী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গোপন রেখে সরকারের গোপন সংস্থার রিপোর্টের বদৌলতে। ওই পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পান অনেক অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজও। এইসব গোপন সংস্থার সদস্যরা তাদের (পদ প্রত্যাশীদের) মতো উচ্চ শিক্ষিত নন, নন পেশাগতভাবে দক্ষ। তাই অনেক সময় তারাও পদপ্রার্থীদের কাছে বিক্রি হয়ে যান, প্রভাবিতও হন। সরকারি দলের নির্ভেজাল ও একনিষ্ঠ নেতা হিসেবে পদপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করাও হয়। রাজনীতিক নেতারা এ ক্ষেত্রে বেশি অগ্রগামী। দেখা গেছে, অনেক নেতার প্রস্তাব সরকার প্রধান উপেক্ষা করেন, তাকে পছন্দও করেন না, তার সুপারিশে দালালির গন্ধ পান, তাই তাদের প্রস্তাব কানেই তোলা হয় না। তারপরও পদপ্রার্থীরা মনে করেন, নেতাকে চেপে ধরলে, অর্থ দিলে এবং দলীয় কার্যালয়ে ঘন ঘন ওঠ্-বোস্ করলে তার সম্ভাবনাটা বা গুরুত্বটা অথবা গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে, এমন চিন্তাও করেন যারা দৌড় প্রতিযোগিতায় কোমরে গামছা বেঁধে নামেন। দেখা গেছে, এই হাইব্রিডেরা দায়িত্ব পেলেই আর দলের চেতনা-আদর্শ এবং নেতার আকাক্সক্ষা সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার কাজ করেন না। ক্রমাগত দল থেকে তার দূরত্ব বৃদ্ধি করেন। ভাবেন তিনি যা হয়ছেন, কী হবে নেতাকে এবং সরকারকে সন্তুষ্ট করে। অথচ সেই তিনিই সচিবালয়ে গিয়ে তার তুলনায় নি¤œ স্তরের কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ সম্ভাষণ করে পদধূলি নিয়ে আত্মতুষ্টি পেতে চান। অর্থ দিয়ে কিংবা সরকারকে সুস্থ চিন্তা করতে না দিয়ে নানা কৌশলে প্রভাবিত করে যারা ওই সব পদে অধিষ্ঠিত হতে ব্যাকুল-আকুল হন, তারা অযোগ্য বিবেচিত হওয়াই কাম্য। কেনো না, যারা ঘুস দিয়ে, রাজনীতিকভাবে প্রভাবিত করে পদে অধিষ্ঠিত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, তারা অধিকাংশই দুর্নীতিপরায়ণ হন। অপরাধপ্রবণও। এরা পদের মর্যাদাটাও বোঝেন না। নেতাকে টাকা দিয়ে, তোষামুদি করে কিংবা দর্লীয় কার্যালয়ে চা-নাস্তার ব্যবস্থা করে, দলের সভার ব্যয় বহন করে, সভায় উপস্থিত হয়ে আলোকিত (?) করেন, তারাই শেষাব্দি সবকিছুতেই নিজের স্বার্থের সঙ্গে তার পক্ষের অবস্থানকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বেশি যতœশীল হন। সবচেয়ে বড়ো বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে কোনো শিক্ষক যখন ছাত্রনেতাদের কাছে তার পক্ষে তদ্বিরে নতজানু হন, তখন তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, সেটা ভাবতেই বিবেকবান যে কারো লজ্জা হয়। তার অর্থ যোগ্যতাহীনেরাই এই দৌড়ে বিশেষভাবে পারদর্শী। এরা পদ পেয়েই অনেকে বলেন, রাখো তোমার দল আর নেতা, এবার চলি নিজের মতো। নেতাদের জন্যে অনেক করেছি, আর না। সে রকম যে কেউ কেউ হয়ে যান, তার প্রমাণ বোধকরি রাজশাহীর নেতারা ইতোমধ্যে পেয়েছেন। না পেলে তারা বিভিন্ন সভায় পদলাভকারীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন কেনো? করেন গালিগালাজও। বলেন, বেঈমান-অকৃতজ্ঞ বলে।
এখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে সন্ধিক্ষণ। ক্ষমতাধরেরা বদল হবেন না পুনঃনিয়োগলাভ করবেন এই নিয়ে চা-খানা, পার্টি কার্যালয়ে, বাসে, চলতি পথে, শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষকদের ব্যক্তিগত কক্ষে, ক্লাবে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আমাদেরও অনেকে জিজ্ঞেস করেন, কে হচ্ছেন উপাচার্য? কী বলবো! জবাবে শুধু বলি, আমি ছাড়া যে কেউ। কারণ আমি তো জানি না সরকার কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কার গলায় ফুলমাল্য পরানোর আয়োজন পূর্ণ করবেন, তারাই জানেন। তবে এবার উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদের জন্যে বেজায় ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এক্কেবারে বুড়ি ছোঁয়া প্রতিযোগিতা। হা-ডু-ডু করে মুখে ফেনা তুলে প্রাণ পণে দৌড়োচ্ছেন। দেখতে আর শুনতে বেশ লাগছে। যারা ক’দিন আগে বিএনপি নেতাকে ‘ভাই’ সম্ভাষণ করে গলার স্বর ভেঙেছেন, সে পক্ষে নির্বাচনও করেছেন, তাদের পেছনে ঘুরেছেন, চাঁদা দিয়েছেন, এখন তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের সে রকম সম্ভাষণে অভিষিক্ত করে পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্নে কোমরে গামছা বেঁধেছেন। কেউ কেউ তো সকালে কমিউনিস্ট বিকেলে আওয়ামী নয়তো জামাত-বিএনপি হয়ে তোষামুদে ভীষণ ব্যস্ত। দলের কোনো ভোটে পরাজিত হননি, যার কাজই আপোসকামিতা তিনিও কম যান না। এই রং বদলকারীদের আবার নেতাদের ভারী পছন্দের। কোন্ অন্তর্নিহিত কারণে নেতাদের তাদেরই পক্ষে প্রকাশ্য অথবা মৌন সমর্থন আর ওকালতি সে কেবল তারাই উত্তমরূপে ব্যক্ত করতে পারবেন। এই রকম বিভ্রান্তি দূর না হলে পদ-পদবির জন্যে অশুভ ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতা থামবে না। শিক্ষাবান্ধব সুস্থ চিন্তার অধিকারী কেউ ও-সব পদে অধিষ্ঠিত হয়ে শিক্ষার গুণগত মান বিকাশের আহ্বান না পেলে জাতি ক্রমাগত এই দৌড়বাজদের অযোগ্যতায় আঁধারে নিমজ্জিত হবে। ইঁদুর দৌড়বাজদের বিপরীতে সরকারের বোধোদয়ের প্রত্যাশা করে জাতি। দেশের উন্নয়নে ও জনকল্যাণে দক্ষ মানবসম্পদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। সেই দক্ষ মানুষ গড়ার প্রকৃত কারিগরেরাই কেবল শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। সরকারকে সেই সব যোগ্য মানুষকে খুঁজে দায়িত্ব দিতে হবে। কার পরিবার শহিদ হয়েছেন, সেটা বিবেচ্য হবে না সেই শহিদ ব্যক্তির প্রতি জাতির উত্তরপ্রজন্মকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর মানসিকতা গড়ে তোলা জরুরি কি না সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি শহিদ পরিবারের কেউ নিজে ভালো মানুষ না হন কিংবা তার পরিপার্শ্ব জুড়ে ইঁদুরদের উপস্থিতি প্রবলতর হয়, তখন কি সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে? দেশের উন্নয়নের প্রত্যুষকালে সরকারেরও সুস্থ ও পরিকল্পিত সিদ্ধান্তের নির্ভুল হোক, সমগ্র জাতি সে রকমই প্রত্যাশা করে।
একজন সংসদ সদস্যের তথ্যানুযায়ী, এবার প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কার্যালয়ে নাকি আশিরও অধিকজন সিভি জমা দিয়েছেন। কতোটা সত্যি জানি না। তবে এই সংখ্যক সিভি জমাদানকারীর তথ্যটা প্রশ্নবিদ্ধ। অবশ্য নেতারা দর বৃদ্ধির জন্যে সব সময় সত্যিটা বলেন না। আমাদের মতো সাধারণের কাছে সত্যিটা চেপে রাখতেই বেশি পছন্দ করেন। নিজেরা লালন করেন ভিন্ন চিন্তা। নেতারা খুশি তাদের সমর্থকরা পদ-পদবি পেলে। কারণ তাতে তোষামোদি আর অর্থ দুটোই তাতে মেলার সম্ভাবনা প্রবলতর হয়। নিজের সমর্থিত কেউ ভিসি, প্রো-ভিসির পদ পেলে তারা দু’পয়সা করে খেতে পারবেন। অবশ্য আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক নেতারা এ রকম ভাবেন না। কোনো কোনো নেতা বিশ্ববিদ্যালয়কে বেকারত্ব নিরোধের যন্ত্র হিসেবে মনে করেন। অথচ তারা নিজেরা বেকারত্ব মোকাবেলা করার কোনো প্রকল্পও হাতে নেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কি কখনো বেকারত্ব নিরসনের কার্যালয়, নাকি শিক্ষার আলো প্রসারের উর্বর চারণভূমি? এ রকম ভাবনা মানবসম্পদ গড়ার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। যেমন দেশের প্রায় প্রতি কলেজে অনার্স পড়ানোর আয়োজন করা হয়েছে, আমরা যাচ্ছি নিয়োগ দিতে, পরিদর্শন করতে। গিয়ে মন সন্তুষ্টির প্যাকেট পাচ্ছি আর কালোকে সাদা হিসেবে বলছি, লিখছি এবং অপরাপর অন্যায্য সহযোগিতা করে দেশের শিক্ষার মান ও শিক্ষাকে দীর্ঘমেয়াদের জন্যে অন্ধকারে নিক্ষেপ করছি, অবিকল সে রকম। না করলে কেনো কে উপাচার্য হবেন কি হবেন না তা নিয়ে মাথা আমাদের ও নেতাদের এতো ঘামাচ্ছি?
আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার সহায়ক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজন। যাদের যোগ্যতা আছে তাদের নিয়োগ দিতে সরকারকেই প্রকৃত যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই মোসাহেব, তোষামুদে ইঁদুরদের প্রাথমিক বাছাই পর্বেই বাদ দেয়া আবশ্যিক। অবশ্য আমাদের মতো দরিদ্র দেশের নানা ব্যাধি। আপাততঃ যার কোনো চিকিৎসা নেই বলে ব্যাধি মুক্ত না হয়ে ক্রমাগত দুরারোগগ্যে রূপান্তর হচ্ছে। সে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়কেও নেতৃবৃন্দ চাকরি দেয়ার যন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করেন। করেন না কেবল শিক্ষার গুণগত উন্নয়ন এবং তার আলোর পরিধি বিস্তারের আয়োজন। এখানে শিক্ষামন্ত্রী কিংবা শিক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটি কতোটা যতœশীল সেটাও আজকে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিনামূল্যের গ্রন্থ যেভাবে স্বাধীনতা বিরোধীদের নির্দেশে মুদ্রিত হয়েছে, সেটাই উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। তবে কি তারাও ¯্রফে ঠুঁটো জগন্নাথ! সে কারণে অধিকাংশ নেতা বেশি তৎপর দুর্নীতিবাজ-ঘুসখোর এবং জবাবদিহিতা বিরোধী মানসিকতার ইঁদুরদের পরিচর্যা করেন। জনগণ বলে, রাজনীতি হলো বিনা পুঁজির ব্যবসা। নির্বাচনে জিতুন আর না জিতুন একবার নেতা হতে পারলেই তার সামনে যা-ইচ্ছে তাই করতে পারার দুয়ার খোলা। তিনি ক্ষমতার বলে যা খুশি তাই করার অধিকার ও যোগ্যতা রাখেন। তাদের ছায়াতলে লেঠেল-মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ভূমিদস্যু আরো কত্তো কিছিমের মানুষ জড়ো হয়, আমরা যারা প্রান্তিক অধিবাসী এবং সংকটে রাজপথে নানা কর্মসূচি নিয়ে থাকি, তারা জানি। নেতাদের কেউ কেউ এখন ‘একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’কেও প্রতিপক্ষ মনে করেন। তারা হয়তো ভাবছেন, ‘নির্মূল কমিটি’ তাদের ভোটের বাক্স আর ভাতের থালা কেড়ে নেবেন। এই অশুভ চিন্তা এবং তাদের নিজের পায়ে কুড়োল মারা কথা ও কাজ আজকে যদি রাজনীতি হয, তবে অপ-রাজনীতি কোনটা?
প্রসঙ্গত স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ২০০৮ সালে আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার কিছুদিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা গ্রেফতারের পর তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি সংবলিত প্রেস বিবৃতিতে এই ইঁদুরদের কেউই স্বাক্ষর করেননি। উল্টো স্বাক্ষর সংগ্রহকারীদের অপমান-অপদস্ত করে তাদের ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তখন বলেছিলেন, কে আপনাকে এই সংকটকালে এ-সব করার দায়িত্ব দিয়েছেন? কেনো আমাদের বিপদে ফেলার চেষ্টা করছেন? আজকের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ এদের প্রায় সবাই সামরিক ছত্রচ্ছায়ায় গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তাবিত ‘কিংস্ পার্টি’তে যোগদানে চেষ্টা করেছেন। দলে যোগ দিয়ে যদি উপাচার্য কিংবা বড়ো কোনো পদ-পদবি মেলে, তাহলে মন্দ কি? সুতরাং সিভি জমাদানকারীদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই বলেই আমাদের মতো অতি সাধারণেরা মনে করেন। বরং তার বাইরে থেকে সৎ-যোগ্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পঠন-পাঠনের আয়োজনের চিন্তা যারা ধারণ করেন, তাদেরকে বাছাই পর্বে রেখে এবং সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে ওই পদগুলো পূরণ করা আবশ্যিক। অবশ্য বাছাই পর্বে টিকলে যোগ দেবেন কি না তার সম্মতিও তাদের কাছ থেকে নিতে হবে। একজন প্রকৃত আদর্শবাদী ও চেতনাসমৃদ্ধ এবং সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একাডেমিশিয়ানকে এ পদে অভিষিক্ত করা সরকারের দায়িত্ব। না হলে এটা মনে করতে হবে যে এ ক্ষেত্রে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের লক্ষ্যে বরাদ্দকৃত শত শত কোটি টাকাও অপচয় হবে। সংবাদপত্রের পুনরায় দুর্নীতিবাজ, বিনা টেন্ডারে কোটি কোটি টাকার কাজ করানো এবং ক্রয় করার অভিযোগের শিরোনাম হবে বিশ্ববিদ্যালয়। বিধায় ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করতে হবে তাদের, যারা দেশটাকে এবং মানুষকে ভালোবাসে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে ধারণ করেন, তাদের নাম ভাবতে অনুরোধ জানাই। যারা কাজ করেন দেশের ও মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে, তারাই এ সব পদের আদর্শ জন। আশা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়াও বিষয়টি ভেবে দেখবেন। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর মতো সাহসী ও যোগ্য সন্তানের ধাত্রীমাতা! কিন্তু তাঁকে আর তাঁর রাজনীতির ভাবমূর্তি ধারণের বিড়াল তাপসী হয়ে যারা ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতার ট্র্যাকে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের অধিকাংশের সহবাসে দেশ দুষ্কর্মে, অপকর্মে আর অপযশের বোঝা নিয়ে আঁধারে ডুবে যাবে ইনশাল্লাহ্।
লেখক: প্রফেসর, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ংঁলরঃংধৎশধৎনধহমষধ@মসধরষ.পড়স