নিজস্ব প্রতিবেদক:
দৈনিক ৬০০ টাকা হারে বকেয়া ৯ মাসের মজুরিসহ উৎসব ভাতার দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের শ্রমিকরা।
সোমবার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে এই কর্মবিরতি চলছে। এছাড়া বেলা ১০ টা থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে আন্দোলনে নামে ১৫৭ জন অনিয়মিত শ্রমিক। পরে কর্মকর্তারা ৯৯৯ এ ফোন দিলে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ কর্তাদের উদ্ধার করে।
জানা যায়, শ্রমিকরা দাবি আদায়ে ইন্সটিটিউটের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় শ্রমিকদের তোপের মুখে রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল বারী ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. ফরহাদ হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা নিজেদের রুমে ঠুকে পড়েন। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
দুপুর আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. ফরহাদ হোসেন। এসময় পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি ইন্সটিটিউটের নিজ অফিস কক্ষ থেকে বের হন। এসময় তিনি জানান, শ্রমিকরা কখন কী করে বলা যায় না। তাই নিজের নিরাপত্তায় তিনি দরজা লাগিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরায়ার্দী হোসেন জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে কর্মকর্তারা নিরাপত্তা শঙ্কায় পড়লে পুলিশ উদ্ধার করে। এসময় কর্তারা ডিজিসহ সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে বেতন ভাতা প্রদানের আশ^াসও দেন। এছাড়া অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এজন্য পুলিশ সেখানে আছে।
এদিকে, শ্রমিকরা ইন্সটিটিউটের সামনে অবস্থান নিয়ে বিগত ৯ মাসের বেতন না পেয়ে অমানবিক জীবনযাপনের চিত্র ধরছেন।
শ্রমিকদের দাবি, রেশম বোর্ডের পরিচালকসহ ৪ জন কর্মকর্তার কুটিলতায় তারা বেতন পাচ্ছেন না। এ সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না। আর আশ^াস তারা চান না। দাবির বাস্তবায়ন চান।
ইন্সটিটিউটের শ্রমিক পলাশ হোসেন বলেন, তিনি ১৪ বছর ধরে এখানে কাজ করছেন। অনেকে তার চেয়ে বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। মাঝেমধ্যেই বেতন নিয়ে কর্মকর্তারা বিরোধ তৈরি করেন। বিগত ৯ মাস ধরে কোনো বেতন না পেয়ে এরইমধ্যে একজন শ্রমিক মারা গেছেন। আরও দু’জন শ্রমিক চিন্তা করে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। অন্যরা বাসায় তিন বেলা খাবার জুটাতে পারছেন না। শ্রমিকরা অমানবিক জীবনযাপন করছে। এর অবসান চান তিনি।
এবিষয়ে রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ এমদাদুল বারী জানান, যে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে তারা সবাই একটি প্রজেক্টের। ওই প্রজেক্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালে জুনে। নতুন করে ওই প্রজেক্টের ২য় পর্যায় অনুমোদনের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদন হওয়ার পরই বেতন দেয়া সম্ভব হবে। প্রকল্প অনুমোদন না হলে বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের মহাপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।#
মাহাবুল