ইদে ৬ দিন ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্ধ থাকবে

আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৪, ১:৪৩ অপরাহ্ণ

 

ইদে ৬ দিন ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্ধ থাকবে

সোনার দেশ ডেস্ক:


ইদুল ফিতরের আগে-পরে সর্বমোট ৬ দিন মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রতিবার ঈদকে কেন্দ্র করে যানজটের কারণে যাত্রীদের প্রচুর ভোগান্তি আমরা দেখতে পাই। তাই এবছর ইদের আগে তিনদিন এবং পরে তিনদিন মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান বন্ধ রাখতে হবে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে বনানী বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে পবিত্র ইদুল ফিতর ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে সড়কপথে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘœ ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ইদে ট্রাক-ভ্যান বন্ধ থাকলেও প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস মালামাল, ওষুধ জাতীয় পণ্য, জ্বালানি, সার জাতীয় পণ্যের গাড়িগুলো এর আওতামুক্ত থাকবে। অর্থাৎ বাকি সব বন্ধ থাকলেও এগুলো শুধু চলবে।

ঢাকার লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি আমাদের খুব লজ্জা দেয় : রাজধানী ঢাকায় চলাচল করা লক্কড়-ঝক্কড় গাড়িগুলো বাংলাদেশে উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যখন বিদেশিরা বাংলাদেশে আসে এবং আমাদের লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি দেখে, তখন আমাদের খুব লজ্জা হয়। এগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পরিবহন মালিকদের এদিকে নজর দিতে হবে।

তিনি বলেন, পরিবহন মালিক সমিতির থেকে বলা হয়েছে যে, ঢাকার বাইরে থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ঢাকায় ঢোকে। আমি তো বলব যে বাইরে থেকে সিটিতে লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি কম আসে। বরং সিটিতেই অনেক লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ির কারখানা আছে। আমি সেগুলো নিজের চোখে গিয়ে দেখেছি। ইদের আগে সেগুলোতে রং লাগাতে দেখেছি, যে রং আবার ১০ দিনও থাকে না।

গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে ইদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া পর্যবেক্ষণের পরামর্শ : আসন্ন পবিত্র ইদুল ফিতরে গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায়কারীদের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে মনিটরিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, কোনো ইদেই মালিকপক্ষ যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করে না। একটি চক্র প্রতি ঈদে বাড়তি ভাড়া আদায়ের কাজটি করে।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ইদে মালিকদের থেকে অতিরিক্ত কোনো ভাড়া নেওয়া হয় না। তারপরও প্রতিবার অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ আসে। আমাদের আসলে এতো পরিমাণ গাড়ি… যার কারণে সবগুলোকে একসঙ্গে দেখা সম্ভব হয় না। প্রতিবার কিছু অসাধু মানুষ আগেই বেশি করে টিকিট কেটে রেখে দেয়, এরপর ইদের আগে বেশি দামে বিক্রি করে। এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাকে কাজে লাগালে প্রতিকার পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, এবার অন্যান্য সময়ের তুলনায় রাস্তাঘাট অনেক ভালো হয়েছে। দুই লেনের রাস্তাগুলো এখন চার লেন হচ্ছে। এগুলোতে ব্যবস্থা নিলে আসা করি এই ইদে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হবে না। গতবার ট্রাফিক পুলিশ ড্রোন দিয়ে রাস্তার সার্বিক অবস্থা দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল, যে কারণে ক্যামেরায় দেখে সঙ্গে সঙ্গে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পেরেছি। এবারও যদি এ রকমটা হয়, তাহলে অনেকটাই সুবিধা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা দেখি প্রতিবারই রাস্তার পাশে হাটবাজার থাকার কারণে যানবাহন চলাচল করতে সমস্যা হয়। এগুলো বন্ধ করার অনুরোধ। অন্যথায় অন্তত মূল সড়ক থেকে হাটবাজার যেন অন্তত দূরে হয়। তাহলে এবার ইদে অন্যান্যবারের মতো ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
ইদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, প্রতি ইদেই রাজধানীতে বাড়তি গাড়ি চলে আসে, যেগুলোর কোনো ফিটনেস থাকে না। এগুলোর কারণেই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। এবার ইদে যেন এগুলো যেন চলতে না পারে। দুর্ঘটনার আরেকটি কারণ হলো মহাসড়কগুলোতে মানুষ অনেক স্পিডে গাড়ি চালায়, সেই সড়কে নসিমন-করিমন চলাচলের কারণে দুর্ঘটনা দেখা যায়। আগামীতে সমস্যা থাকবে না।

ইদের আগে সব সড়কে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে : ঘরমুখী মানুষের যাতায়াত নির্বিঘঘ্ন করতে ইদের সাত দিন আগে থেকে দেশের সব সড়কে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে। সেইসঙ্গে ইদের পরের তিন দিনও কাজ বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে বিআরটিএ’র সদর দফতরে ইদুল ফিতর উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘঘ্ন ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সড়ক পরিবহন বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সকল সড়কে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে। সড়ক থেকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে রাখতে হবে। ইদের সাত দিন আগে থেকে ইদের পর তিন দিন পর্যন্ত সড়কে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে।

ইদ সার্ভিসে যুক্ত হবে ঢাকায় চলাচল করা বিআরটিসির ৫৫০ বাস : আসন্ন ইদুল ফিতর উপলক্ষ্যে রাজধানী শহর ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী পরিবহনে অংশ নেবে ঢাকায় চলাচল করা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) ৫৫০টি বাস। দূরপাল্লার বাসগুলোর পাশাপাশি এই বাসগুলো সার্ভিস দেবে। সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে মতিঝিল বিআরটিসি ভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আমরা গত সপ্তাহে ইদে উপলক্ষ্যে মিটিং করে সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ঢাকা শহরে আমাদের ৬০০টি বাস আছে। এখান থেকে ঢাকা শহরের জন্য ৫০টি বাস রেখে বাকি ৫৫০টি বাস ঈদ সার্ভিসে যুক্ত করা হবে। এছাড়া আমাদের বাকি দূরপাল্লার বাসগুলো নিয়মিত চলবে। এবার ইদের ছুটি লম্বা হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের বহরের গাড়িগুলোর মাত্র ৩৪টির লিজে আছে। আমরা আর গাড়ি লিজে চালাবো না। এটি শূন্যে কোটায় আনা আনা হবে। তিনি বলেন, ২০২০ সালে ১ হাজার ৮২৫টি বাসের মধ্যে ৮৮৫টি বাস অনরুট ছিল; ২০২১ সালে ১ হাজার ৭৬২টি বাসের মধ্যে ১ হাজার ১০৬টি বাস অনরুটি ছিল, ২০২২ সালে ১ হাজার ৩৫০টি বাসের মধ্যে ১ হাজার ২৩৩টি বাস অনরুটে ছিল এবং ২০২৩ সালে ১ হাজার ৩৫০টি বাসের মধ্যে ১ হাজার ২৫৩টি বাস অনরুটে ছিল। – ঢাকা পোস্ট ও বাংলা ট্রিবিউন

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ