রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে গত বুধবারের সংঘর্ষের জের ধরে ফের সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও গুলিবর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের বিলকেদার-দাদাপুরের হেনা বাঁধের ওপরে সংঘঠিত এ সংঘর্ষে বিএনপি ও জামায়াতের ৪ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে ওই এলাকায় র্যাবের টহল, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বাড়তি নজরদারি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সংঘর্ষে আহতরা হলেন বিএনপি নেতা নুন্নু বিশ্বাস, যুবদল কর্মী সুজন, রিংকু বিশ্বাস ও জামায়াতের কর্মী ইমরান হোসেন। আহতদের রাজশাহী ও ঢাকায় ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ, বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক নেতাকর্মী এবং স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরে হেনা বাঁধে বিএনপির উদ্যোগে সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে মাইক্রোবাসে বিএনপি-যুবদলের নেতাকর্মীরা মহড়া দেওয়ার সময় জামায়াতের এক কর্মীকে হেনস্থা করে এবং জামায়াতের নেতা আকরাম হোসেনকে উদ্দ্যেশ্য করে কটু কথা বলে। এর পরপরই বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষনের ঘটনা ঘটে। এসময় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বাঁধের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, এলাকার সাধারণ মানুষ দিগবিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। এক পর্যায়ে বাঁধের নিচে ও ও উপরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে।
এসব ঘটনা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি- স্থানীয় জামায়াতের নেতা আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে বিনা উস্কানিতে ইউনিয়নের বিএনপি নেতা-কর্মীদের মারপিট ও হামলা চালানো হচ্ছে। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর দাবি- বিএনপির নেতাকর্মীরা বারবার জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর সসস্ত্র হামলা চালাচ্ছে. জামায়াতের কর্মীরা তা প্রতিহত করতে গেলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রঞ্জু বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে আকরাম হোসেন এলাকায় জামায়াতের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য আওয়ামী যুবলীগ ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে বারবার বিএনপি নেতাদের ওপর হামলা চালিয়ে এলাকা থেকে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দিয়ে আসছে। একারনে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতা আকরাম হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নে জামায়াতের জনপ্রিয়তা দেখে বিএনপি নেতারা তাদের ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ কারনে তারা বারবার জামায়াতে ইসলামী নেতাদের ওপর সসস্ত্র হামলা চালাচ্ছেন। এই হামলা প্রতিহত করতে গিয়েই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান, ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকায় র্যাবও টহল দিচ্ছে। বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে দুটি লিখিত অভিযোগ থানায় দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পর্যালোচনা করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা রেকর্ড করা হবে।