ঈশ্বরদীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মন্দিরে তালা

আপডেট: জানুয়ারি ১১, ২০১৭, ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি


হিন্দু সম্প্রদায়ের দুইপক্ষের মধ্যে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ঈশ্বরদীতে একটি মন্দিরে তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনার পাঁচদিন পর বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই মন্দিরের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদী শহরের ফতেমোহাম্মদপুর হিন্দুপাড়ায়।
তালা খুলে দেওয়ার পর থেকে মন্দির এলাকায় পুলিশের পাহারায় রাখা হয়েছে। এ নিয়ে থানায় দুইপক্ষের মিমাংসার জন্য একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। স্থানীয় হিন্দুরা জানান, ঈশ্বরদী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতার নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার একপক্ষ ওই মন্দিরে তালা লাগিয়ে দেয়। তালা লাগানোর পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ওই মন্দিরে হিন্দুদের ‘সেবা প্রদান’ বন্ধ ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে ফতেমোহাম্মদপুরের হিন্দুপাড়ায় ‘রাধাগোবিন্দ মন্দির’ নামে একটি মন্দির নির্মাণ করা হয়। ওই মন্দিরের জায়গা নিয়ে হরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে সুশীল বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিপক্ষ ঘ্যাতন প্রামাণিকের ছেলে জ্ঞানেন প্রামাণিকের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। কয়েকবছর আগে জ্ঞানেন প্রামাণিক মন্দিরের অর্ধ শতাংশ জমি বিক্রি করে দেন। বিক্রির পর সেখানে মন্দিরের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ করা হলে জ্ঞানেন দাবি করেন বিক্রির অতিরিক্ত জায়গা দখল নিয়ে মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে গত বৃহস্পতিবার জ্ঞানেন প্রামাণিক ও তাঁর স্ত্রী শিখা রাণী মন্দিরে তালা লাগিয়ে দেন। এ বিষয়ে জ্ঞানেন প্রামাণিক জানান, তালা লাগানোর সময় আমি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী নেতা সাহাবুদ্দিন পচাকে ডেকে আনি এবং তিনি বলেন, তালা লাগিয়ে দাও, পরে সমস্যার সমাধান করা যাবে। এ কথার পর আমি মন্দিরে তালা লাগিয়ে দেই।
অন্যদিকে সুশীল বিশ্বাস বলেন, তাদের হিন্দুপাড়ায় শুধুমাত্র জ্ঞানেনের চার পরিবার ছাড়া সকলেই ওই মন্দিরে সেবা প্রদানের জন্য আসতেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে জ্ঞানেন প্রামাণিক মন্দিরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার পর থেকে পূজা ও সেবা প্রদান বন্ধ ছিল। বিষয়টি কাউকে সেভাবে জানাইনি। কিন্তু গতকাল হঠাৎ পুলিশ এসে মন্দিরে তালা খুলে দেয়। বর্তমানে মন্দিরের তালা চাবি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই তালুকদার জানান, হিন্দুদের মন্দিরের সম্পত্তি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের ঘটনায় তালা লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি জানার পরপরই গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে পুলিশ পাঠিয়ে মন্দিরের তালা খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে পুলিশ পাহারা রাখা হয়েছে। দুইপক্ষকেই থানায় ডেকে মিমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা সাহাবুদ্দিন পচা তালা লাগিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্যই মন্দিরে তালা লাগিয়ে দিতে বলেছিলাম।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ