ঈশ্বরদীতে রূপপুর প্রকল্পে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আন্তর্জাতিক ‘স্মৃতি উদ্যান’ II লাগানো হবে ২ কোটি ৭০ লাখ গাছের চারা

আপডেট: মে ১৪, ২০২৪, ১১:৫৯ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মদানকারী রুশ ও বাঙালি সৈনিকদের স্মরণে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আবাসিক এলাকা ‘গ্রিন সিটি’ তে তৈরি হচ্ছে ‘স্মৃতি উদ্যান’। রসাটম প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এই ‘স্মৃতি উদ্যান’ এর কার্যক্রম বাংলাদেশ এবং হাঙ্গেরীতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজন করা হয়েছে। রসাটম প্রকৌশল বিভাগ পর্যায়ক্রমে যে সকল দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র্র নির্মাণ করছে, সেখানে নিয়মিতভাবে এটির আয়োজন করা হয়।

রসাটম প্রকৌশল বিভাগে কর্মরত এবং স্বেচ্ছাসেবকরা ঈশ্বরদীর গ্রিন সিটি এলাকায় ২৮টি ফার গাছের চারা রোপণ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে যেসকল রুশ এবং বাঙালি আত্মত্যাগ করেন, তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই গাছের চারা রোপণ করেন।

এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলেক্সি দেইরি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী হিরোদের আমরা এই ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আজকে রোপণকৃত এই বৃক্ষগুলো শুধুমাত্র আমাদের পূর্বপূরুষদের বীরোচিত কাজকেই স্মরণ করিয়ে দেবে না, একই সঙ্গে পরিবেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। পরিবেশ সুরক্ষার ব্যাপারে রসাটম সর্বদাই যত্নশীল। তাই আমরা বিভিন্ন পরিবেশ উদ্যোগের সঙ্গে নিয়মিতভাবে সহযোগিতা করে আসছি।’

ভূতপূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতির পুনঃনির্মাণে সোভিয়েত ইউনিয়ন এগিয়ে এসেছিল। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সোভিয়েত নাবিকরা চট্রগ্রাম বন্দরে মাইন অপসারণে কাজে ব্যবহার ও বিধ্বস্ত জাহাজ-গুলোকে পানির নীচ হতেও উদ্ধার করেন। এটি ছিলো বিদেশে পরিচালিত সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন, যার সম্পর্কে অনেকেরই খুব একটা জানা নেয়।

একটি রুশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্মৃতি উদ্যান ইভেন্ট আয়োজনের সূচনা ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী যোদ্ধাদের স্মৃতিকে স্মরণ করতে আয়োজিত এই উদ্যোগে সহায়তা করছে রুশ প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ফেডারেল বন এজেন্সি।

এই উদ্যোগের অধীনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহিদদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে একটি করে মোট ২ কোটি ৭০ লাখ গাছের চারা রোপণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রত্যেক শহিদের সবুজ স্মৃতিফলক হিসেবে প্রতিটি গাছকে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য হলো, বন সম্পদের রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার, যা বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সহায়তা করবে। রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর এই ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। সারাবিশ্বের ৫০টির অধিক দেশের স্বেচ্ছাসেবকরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ