বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:
পাবনার ঈশ্বরদীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা মামলায় ফাঁসির দন্ডসহ ৪৭ নেতাকর্মী ৫ বছর কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে ঈশ্বরদীতে ফেরেন গত ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন গণসংবর্ধনায় শীর্ষ ৩ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, মকলেছুর রহমান বাবলু ও জাকারিয়া পিন্টু একমঞ্চে পূর্বের সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণার ৪ মাসের মাথায় দুই নেতা পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে ঈশ্বরদীর তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবারো দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন।
এদিকে এই অনৈক্য দূর করে আবারো একসাথে ঐক্যবদ্ধ হতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিন নেতার একজন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাবলুর আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দীর্ঘ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অতি সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের অনাকাক্সিক্ষত কর্মকান্ড বা আচরণ ঈশ্বরদীর মানুষকে ভাবিত করেছে, হতাশ করেছে, যা এখনই পরিসমাপ্তি জরুরী। আশা করি আমাদের ধৈর্য্য ও সহনশীল আচরণের মাধ্যমে গত ১১ ফেব্রুয়ারী তারিখের গণসংবর্ধনায় দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা পাবে। ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক পরিকল্পনাগুলোকে সর্বজনীন করার জন্য ঐক্যবদ্ধ ভাবে আমরা তিনজন (হাবিব-বাবলু-পিন্টু) কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করে যাবো।
সেদিন আমরা ঈশ্বরদীবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম আমরা আমাদের অতীতের ভুলভ্রান্তি শুধরে নিয়ে ঈশ্বরদীর উন্নয়ন এবং ঈশ্বরদীর শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকবো। সেদিন আমরা ৩ জন হাতে হাত ধরে যে ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছিলাম তখন ঈশ্বরদীর মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন, কিন্তু অতি সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবে সংঘঠিত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় ঈশ্বরদীর মানুষকে ভাবিত করেছে, হতাশ করেছে, যা এখনই অবসান হওয়া দরকার। তিনি বলেন, আশা করি আমাদের ধৈর্য্য ও সহনশীল আচরণের মাধ্যমে গত ১১ ফেব্রুয়ারির গণসংবর্ধনায় দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা পাবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফাঁসির দন্ড থেকে মুক্ত বিএনপি নেতা মাহ্বুবুর রহমান পলাশ, রেজাউল করিম ভিপি শাহীন, আজমল হোসেন ডাবলু, যুবদল নেতা মিজানুর রহমান, রুহুল আমিন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নসহ দলীয় শতাধিক নেতাকর্মী।
প্রসঙ্গতঃ কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর গত ৪ মাস উল্লিখিত তিন নেতা একসাথে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও পাবনায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পিন্টুর উদ্দ্যেশ্যে হাবিব এবং গত রোববার রূপপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে হাবিবুর রহমান হাবিবের উদ্দ্যেশ্যে জাকারিয়া পিন্টু নেতিবাচক বক্তব্য দিলে তৃণমূল পর্যায়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা।
এসব বিষয়ে পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমি কিছু বলতে চাই না তবুও বলবো, ওরা আমার ছোট ভাই, ওরা কখন কি বলে তা নিয়ে মন্তব্য করা আমার উচিৎ হবে না।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু বলেন, আমরা ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক পরিবেশ সুশৃঙ্খল রাখতে পূর্বের সকল মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী যেই হোক না কেন তাকে বিজয়ী করে পাবনা-৪ আসনটি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার দিতে চাই।
ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, হাবিবুর রহমান হাবিব ব্যাক্তি পর্যায়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করায় তার প্রতিবাদে আমি প্রতিবাদ সমাবেশে তার বিরুদ্ধে আমার বক্তব্য দিয়েছি। তবে ঐক্যের কোন বিকল্প নেই, আমিও চেষ্টা করছি ঐক্যবদ্ধ থাকার, সবার আগে সব নেতাকেই মন পরিষ্কার করতে হবে।