শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে মাঠে নামার আগে কতটা উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল? ওয়েলিংটন টেস্টের হতাশাজনক হার, চোট সমস্যার কালো ছায়া দলের ওপর। নিউজিল্যান্ড সফরের হারের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা। সফরটাকে এমনিতেই দীর্ঘ মনে হচ্ছে। এমন সফরের শেষে থাকে ঘরে ফেরার তাড়াও। শেষ ম্যাচটা তাই কঠিন পরীক্ষা হয়ে আসছে বাংলাদেশের জন্য। মানসিকভাবে উজ্জীবিত থেকে মাঠে নামাটাই আসল চ্যালেঞ্জ।
এখন পর্যন্ত এই সফরে সাত ম্যাচের প্রতিটাই হেরেছে দল। ওয়েলিংটন টেস্টটা তো হেরে গেছে অবিশ্বাস্যভাবে, প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। দ্বিতীয় ইনিংস থেকেই দুর্ভাগ্য পিছু নেয় বাংলাদেশের। ঊরুর চোটে মাঠ ছাড়েন ইমরুল কায়েস। টিম সাউদির বাউন্সারে মাথার পেছনে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে যেতে হয় মুশফিককে। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। ওয়েলিংটনে বাউন্সার সামলাতে গিয়ে পাঁজরে আঘাত পেয়েছিলেন মুমিনুল হকও। তিনজনকেই পাচ্ছে না বাংলাদেশ।
দুজনের অভিষেক হতে পারে, ফিরতে পারেন মাত্র ৩ টেস্ট খেলা সৌম্য। দলে অভিজ্ঞতার ঘাটতি পরিষ্কার। তা ছাড়া যে তিনজনকে হারাল দল, তিনজনই এরই মধ্যে টেস্টে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে প্রমাণিত। নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়াই এই কঠিন পরীক্ষায় নামছে বাংলাদেশ।
অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে নেয়া তামিম ইকবালের জন্য এটি বড় এক চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জ গোটা টিম ম্যানেজমেন্টের জন্যই। এমনিতেই নিউজিল্যান্ডে হারতে হারতে দল ‘ক্লান্ত’। সেই ক্লান্তিতে যোগ হয়েছে গত ম্যাচের হতাশা। সেই সঙ্গে চোটের কারণে ‘মিনি হাসপাতালে’ রূপ নেয়া ড্রেসিং রুম। তামিম অবশ্য জানাচ্ছেন, দলের মানসিকতা এখনো ইতিবাচকই আছে, ‘পুরো সফরেই খেলোয়াড়দের দৃষ্টিভঙ্গি অসাধারণ ছিল। আমরা কিছু ভুল করেছি, সেটির মাশুল দিয়েই আমরা ম্যাচগুলো হেরেছি। আশা করছি ভুলগুলো যতটা সম্ভব কমাতে পারব।’
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের আগে আরো একটি শঙ্কা ভর করছে দলের ওপর। ওয়েলিংটনের মতো এখানে উইকেট ব্যাটিং-বান্ধব না হওয়ার একটা সম্ভাবনা কিন্তু থাকছেই। বিশেষ করে ওয়েলিংটনের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেভাবে নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলিংয়ের সামনে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছেন, তাতে নিউজিল্যান্ড ক্রাইস্টচার্চে ফাস্ট-বোলিংয়ের অস্ত্রে বাংলাদেশকে ঘায়েল করার সুযোগ কেন ছাড়বে!
সফরের শেষ টেস্ট হওয়ার কারণে শঙ্কাটা কিন্তু আরও বেশি করে জাগছে। এমনিতেই যেকোনো সফরের শেষ দিকে মানসিকভাবে একটু অস্থির থাকে যে কেউ। ঘরে ফেরার তাড়নাটা বেশি করে কাজ করায় সফরের শেষ দিকে এসে মনোযোগে ঘাটতি হওয়াটা স্বাভাবিকই। নিউজিল্যান্ডের এই সফরটিতে জয়ের আনন্দ না থাকায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে এমন অবস্থা বেশি করেই কাজ করবে দলের মধ্যে। মানসিক এই ব্যাপারটি ঝেড়ে ফেলতে না পারলে ভালো পারফরম্যান্স কিন্তু কঠিনই হবে দলের জন্য।
এ ব্যাপারে তামিমের মত কিন্তু অন্যরকম। তিনি মনে করেন নিউজিল্যান্ডে ভালো খেলেও ফল বাংলাদেশের পক্ষে আসেনি, ‘ফল দেখলে বোঝা যাবে না এই সফরে আমরা কতটা লড়াই করেছি। কিন্তু যারা খেলা দেখেছেন তারা কিন্তু জানেন, এই সফরে আমরা কতটা ভালো খেলেছি।’
তামিম মনে করেন শেষটা ভালো করতে সবাই ঝাঁপিয়েই পড়বে এক সঙ্গে, ‘আর একটা ম্যাচ বাকি আছে এই সফর। সবাই কঠোর পরিশ্রম করবে শেষটা ভালো করতে।’ শেষ ভালো যার, সব ভালো তাঁর।-প্রথম আলো অনলাইন