উত্যক্তে প্রতিবাদ করায় রাবিতে দুই গ্রুপের মারামারি

আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০১৬, ১১:৫০ অপরাহ্ণ

রাবি প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আব্দুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত নাজমুস সাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। সে মাদার বখশ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত নয়টার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রীর কয়েকজন বন্ধু যৌন হয়রানির বিষয়টি মীমাংসার জন্য নবাব আব্দুল লতিফ হলে আসেন। সেখানে সাকিব ও তার সহযোগীদের মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। পরে এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়।
ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সাইকেল চালাচ্ছিলাম। এমন সময় সাকিবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাকে উদ্দেশ্য করে কটুক্তি করে। সাইকেল থামিয়ে তাদের দিকে তাকানোর সাথে সাথেই তারা ছুটে আসে এবং বলতে থাকে, ‘আপু হেল্প লাগবে?’ এসময় আরো কিছু বাজে শব্দ ব্যবহার করে তারা। এছাড়াও সাইকেলের হ্যান্ডেল ঠিক করে দেবার অজুহাতে তারা আমাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তাদের এমন আচরণের কারণে একটু দুরে থাকা আমার বন্ধুদেরকে ডাক দেই। তারা ঘটনাস্থলে আসলে কটুক্তির বিষয়ে বললে একটু কথা কাটাকাটি হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বন্ধু এরশাদ বলেন, ‘মীমাংসার জন্য লতিফ হলে গেলে তারা হলের মূল ফটক বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সাকিব ও তার কয়েকজন সহযোগী আমাদের ওপর রড ও ইট দিয়ে হামলা করে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে সাবিক বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু প্যারিস রোড দিয়ে হাঁটছিলাম এবং ছবি তুলছিলাম। এমন সময় ওই মেয়েটি আমাদের মাঝখানে পড়ে যায়। মেয়েটির সাইকেলে একটু সমস্যা মনে হওয়ায় তার সাহায্য লাগবে কিনা জিজ্ঞেস করি। সে বললো- সাইকেলের হ্যান্ডেল বেকে গেছে। আমি সেটা ঠিক করে দেই এবং মেয়েটির অনুরোধে সাইকেলে ধাক্কা দেই। এসময় নিজেদের মধ্যে পরিচিতও হই আমরা। কিন্তু কিছুদুর সামনে এগোতেই মেয়েটি তার কয়েকজন বন্ধুকে ডাকে এবং আমরা নাকি তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছি সেই অভিযোগ করে।’
সাকিব আরো বলেন, ‘বিষয়টি সেখানেই দুঃখ প্রকাশ করে সমাধান করে নিই। কিন্তু তারা বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে নিয়ে পরে অযথাই আমার বন্ধুদেরকে হেনস্তা করার জন্য হলে এসে মারধর করে।’
এ ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম রাজু সেখানে উপস্থিত হয়ে কোন বিষয় না শুনেই নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিমকে মারধর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করা হবে।’