বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
উপাচার্য হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তারা দায়িত্ব চেয়ে নেননি, হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।
তিনি বলেছেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের বলতে চাই, শিক্ষকদের মর্যাদাক্ষুন্ন বা মর্যাদাহানি হয় এমন কাজ তোমরা করো না। নিজেদের দাবি আদায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করো। এই সময়ে যারা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তারা দায়ি
ত্ব চেয়ে নেননি। আমরা হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের ধৈর্যশালী ও সহনশীল হতে হবে।”
রবিবার (৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎযাপন উপলক্ষে সিনেট ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিগত বছরগুলোতে কি হয়েছে আমরা জানি। শিক্ষক নিয়োগের বদলে ভোটার নিয়োগ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা মেধার বিকাশ ও শিক্ষা অর্জনের জন্য এসেছি। সেখানে নিজেরা দলাদলি করলে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় চরমভাবে ব্যর্থ হবে। শিক্ষকদের কার্যক্রম যেন পরিবেশকে নষ্ট না করে, সে দায়িত্ব শিক্ষকদের নিতে হবে।”
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বদলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কে কী লিখছে, তা নজরদারি করতেন। শিক্ষক হিসেবে কত নিচে আমরা নেমেছি, এটা তার বাস্তব উদাহরণ। ড. জোহা (সাবেক প্রক্টর, রাবি) পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন। পক্ষান্তরে ঢাবি উপাচার্যের ভবনে একটি ঘটনা ঘটে, তখন উপাচার্য পুলিশকে নির্দেশ দেন ছাত্রদের গুলি করার জন্য।”
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিচার করি। অপরাজনীতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে আছে। শিক্ষক নিয়োগেও পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। সামনে আবারো শিক্ষক নিয়োগ না হয়ে ভোটার নিয়োগ হতে পারে। তাই আপনাদের পরিষ্কার করতে হবে যে, আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ দেখবেন নাকি ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ দেখবেন।”
তিনি বলেন, “দলীয় স্বার্থ দেখলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী আছে। এই সংখ্যা আরো বাড়াতে হবে। আমাদের ছেলেরা যে রক্ত দিয়েছে তার দায় আমাদের শোধ করতে হবে। এই জায়গায় আমরা বেইমানি করলে আমরাই সবচেয়ে বড় বেইমান।”
সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমেরিটাস এ কে এম আজহারুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মতিয়ার রহমান।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। এসময় বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা অবমুক্ত করে দিবসটির উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা। এরপর শোভাযাত্রা ও প্রধান অতিথি কর্তৃক বৃক্ষরোপণ করা হয়। এছাড়া বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামে খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: রাইজিংবিডি