উপাচার্য নিয়োগের পরই রাবি প্রশাসনে পদত্যাগের হিড়িক

আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০১৭, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

শিহাবুল ইসলাম


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. আব্দুস সোবহান নিয়োগ পাওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পদত্যাগ শুরু হয়। তিন মাসের মধ্যেই রেজিস্ট্রার, গ্রন্থাগারের প্রশাসক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও প্রক্টরের পর এবার পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মশিহুর রহমান। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মিজানুর রহমানও পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়ে গত ৭ মে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে উপাচার্যের কার্যালয়ে দ্বিতীয় বারের মতো তিনি এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন যে উপাচার্য ও উপউপাচার্য দায়িত্বে আসেন, তাদের পছন্দমতো শিক্ষকদের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বসিয়েই নতুন প্রশাসন সাজিয়ে থাকেন তারা। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ গ্রহণকারী শিক্ষকরা এর আগের প্রশাসনের আমলে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ওইসময় উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও উপউপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান। নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পর তাই ‘আত্মসম্মানের’ সঙ্গে ওই কর্তাব্যক্তিরা নিজেদেরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন বলেই জানা গেছে।
রেজিস্ট্রার, গ্রন্থাগারের প্রশাসক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও প্রক্টরের পর সর্বশেষ গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এমএ বারীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক মশিহুর রহমান। এর এক সপ্তা আগে গত ৬ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার পদত্যাগের চার ঘণ্টার মাথায় নতুন প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পান বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান। তার দুই দিন আগে গত ৪ আগস্ট ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান অধ্যাপক আসাবুল হক। তবে পদটি এখনও খালি রয়েছে।
এরও আগে অধ্যাপক আব্দুস সোবহান উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ১৫ ঘণ্টার মাথায় পদত্যাগ করেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মুহাম্মদ এন্তাজুল হক। কিন্তু উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি। পদত্যাগের ৫৩ দিন পরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক এমএ বারীকে রেজিস্ট্রার পদের দায়িত্ব দেয়া হয়। এন্তাজুল হকের পর দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় গত ১৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রশাসক অধ্যাপক ড. সফিকুন্নবী সামাদী পদত্যাগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলে উপাচার্য সেটি গ্রহণ করেন। এর ১৮ দিন পর গত ২ জুলাই হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র শীলকে গ্রন্থাগারের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেন উপাচার্য। পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে আবার চলতি সপ্তাতেই ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক মিজানুর রহমান পদত্যাগ করবেন বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ