বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে এবারে গড় পাসের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০২২ সালে গড় পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সে হিসাবে এবারে পাসের হার ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ কম হয়েছে।
এ বছর সর্বোচ্চ ফলাফলের সূচক জিপিএ-৫ অর্জনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৩৬৫ শিক্ষার্থী। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩ শিক্ষার্থী। সেই হিসাবে জিপিএ-৫ কমেছে প্রায় অর্ধেক।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পাসের হারেও এগিয়ে ছাত্রীরা, তাদের পাসের হার ৮০ দশমিক ৫৭। অন্যদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭৬। উত্তীর্ণ হওয়া সকল শিক্ষার্থীর প্রতি অভিনন্দন ও শুভকামনা রইলো।
সম্ভবত এবারই প্রথম এ ঘটনা ঘটলো যে, একই বছরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার দ্বিতীয়বার ফল প্রকাশিত হলো। ২০২২ সালের অনুষ্ঠিত এএচিএসসি পরীক্ষার ফল এ বছরের ৮ ফেব্রƒযারি প্রকাশিত হয়েছিল এবং চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলো রোববার (২৬ নভেম্বর)। গত বছর নানাবিধ সমস্যার কারণে পরীক্ষা গ্রহণ হয়েছিল নভেস্বর মাসে এবং ফল প্রকাশিত হয়েছিল এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে।
২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’-২০২৩ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ঠিক সেই মুহূর্তে এইচএসসি পরীক্ষায় মেয়েদের এগিয়ে থাকার বিষয়টি নারীর ক্ষমতায়নরে অগ্রগতিরই সাক্ষ্য দিচ্ছে।
মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র বেছে নিবে। শিক্ষার যে ক্ষেত্রেই তারা প্রবেশ করুক না কেন- সবখানেই যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। এর জন্য নিজেকে সক্ষম করে গড়ে তোলার অন্য কোনো বিকল্প নেই।
উচ্চশিক্ষার পথ মোটেও মসৃণ হবে না যতক্ষণ না অধ্যবসায় ও অনুশীলনে নিজেকে শাণিত করা যায়। জিপিএ-৫ এর আত্মতুষ্টিতে না ভুগে প্রতিযোগিতায় বারবার নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে বৈশি^কভাবে যোগ্যতাসম্পন্ন সু নাগরিক হিসেবে নিেিজকে গড়ে তুলতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সমান অংশিদার হতে হলে নিজের দক্ষতা-যোগ্যতা বৃদ্ধির অন্য কোনো বিকল্প নেই।
প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে যেমন, তেমনি অভিভাবককেও তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত জীবনের দিকে তাকাতে হবে। অভিভাবকদের উদ্দেশ্য হওয়া বাঞ্ছনীয়- সন্তান যেন ভাল মানুষ হয়। শিক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই হতাশাগ্রস্ত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যে শিক্ষার্থীরা কাক্সিক্ষত ফল করতে পারেনি কিংবা উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে তারা যেন কোনোভাবেই সহানুভুতি ও অনুপ্রেরণা থেকে বঞ্চিত না হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের সে কথাই বলেছেন। তিনি রোববার (২৬ নভেম্বর) বলেন, যারা ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি, তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অভিভাবকদের বলবো, যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে হবে। সে যে পারে নি, সেটার কারণ খুঁজে তাকে আরো মনোযোগী করতে উৎসাহী করতে হবে। ধমক বা গালমন্দ-তিরস্কার করা ঠিক হবে না।
প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষার্থীর প্রতি বন্ধুর হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না ব্যর্থতা সফলতার মতই জীবনের একটি অংশ। আর আজ ব্যর্থ হয়েছে বলে কাল সফল হওয়া যাবে না- এমন কথা অসারতায় পূর্ণ। শিক্ষার্থীদের সাহস যোগাতে হবে, সাফল্যের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীকে আবারো শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।