একদফা দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিল

আপডেট: আগস্ট ৪, ২০২৪, ১০:২৮ অপরাহ্ণ

বিক্ষোভ মিছিল শেষে নগরীর তালাইমারি মোড়ে গণসমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা

রাবি প্রতিবেদক:


সরকারের পতনের একদফা দাবিতে রোববার (৪ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের অসহযোগ আন্দোলন। এর মধ্যে সারাদেশের মত রাজশাহীতেও বিক্ষোভ মিছিল ও গণসমাবেশ করেছে আন্দোলনকারীরা। সকাল সাড়ে দশটায় রুয়েট গেটের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। দুপুর আড়াইটায় আন্দোলনকারীরা রাজপথ থেকে চলে গেলে শোডাউন করেন রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ৭-৮টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা এগারোটায় বিক্ষোভ মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আধাঘন্টা আগেই জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করেন কিছু আন্দোলনকারী। এরপর মিছিলে যোগ দেন হাজারো নারী-পুরুষ। এরমধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার দশ হাজারের বেশি মানুষকে দেখা যায়। তাদের অধিকাংশের হাতে ছিল লাঠি, মাথায় পতাকা বাধা। এদিন কাফনের কাপড় পড়ে স্লোগান দিতে দেখা যায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহ-সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারকে।

এসময় ‘আমার ভাই মরলো কেন, শেখ হাসিনা জবাব দে’, ‘এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা কখন যাবি’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের চামড়া, তুলে নিবো আমরা’, ‘এক দুই তিন চার, শেখ হাসিনা গদি ছাড়’, ‘ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাচিনা’, ‘ভারতের নায়িকা, পদত্যাগ করে যা’, ‘হইহই রইরই, ছাত্রলীগ গেলি কই’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরো দেবো রক্ত’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো ‘, ‘লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে রুয়েট গেটের সামনে থেকে ভদ্রা মোড়ের দিকে রওনা হন আন্দোলনকারীরা। এসময় ভদ্রা মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন কিছু ব্যক্তি। সেখানে আধাঘন্টা মত অবস্থান করার পর তালাইমারি মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে দুপুর ১টার দিকে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন আন্দেলনকারীরা। এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির সমন্বয়ক ও ও সহ-সমন্বয়করা চলে গেলেও সেখানে থেকে যান কিছু ব্যক্তি। তাদের একটা অংশ থানার দিকে যেতে উদ্যত হলে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

এসময় আন্দোলনকারীদের নিবৃত্ত করতে দেখা যায় রাবির কয়েকজন শিক্ষককে। তাদের মধ্যে ছিলেন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ফরিদুল ইসলাম, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাসুদুল হাসান খান, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসুদসহ ৬-৭ জন। এসময় তালাইমারি মোড়ের পুলিশ বক্স ভাঙচুর করেন কিছু ব্যক্তি এবং আগুন লাগিয়ে দেন।

এসময় আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরে আমরা চলে যাচ্ছিলাম। তখন জানতে পারি যে, পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। আমার মনে হচ্ছে এখানে একটা তৃতীয় পক্ষ অনুপ্রবেশ করেছে। তারা হয়তোবা পুলিশের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে, তখন পুলিশ হয়তোবা পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ আজ যুদ্ধাংদেহী ছিলো না। এখানে আমরা অপরিচিত মুখ বেশি দেখছি।
পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ১ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওই অংশটি মহাসড়ক থেকে চলে গেলে সাহেববাজারের দিক থেকে তালাইমারিতে

আসেন রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা তালাইমারি থেকে বিনোদপুর এলাকা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় ৭-৮টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এবিষয়ে জানতে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি প সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সভাপতির নমৃবর বন্ধ পাওয়া যায় এবং সম্পাদক কল রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন: রাজশাহীতে বিক্ষোভ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ