শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী মহানগর পুলিশের পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, একে অপরকে দোষারোপ না করি, সবাই নিজের স্থানে নিজের কাজটি ঠিক মত করি। তাহলেই সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে। কারণ চাইলেই গাড়ির মালিক শ্রমিককে নানাভাবে দোষারোপ করতে পারবেন ঠিক তেমনি ভাবেই শ্রমিকও মালিককে নানাভাবে দোষারোপ করতে পারবেন।
গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর শিরোইল পুরাতন বাস টার্মিনালে ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, দুর্ঘটনা মুক্তসমাজ গঠনে অবদান রাখুন’ শীর্ষক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ট্রাফিক সচেতনতা ও প্রচারণামূলক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও ট্যাংলোরি, কার্ভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজশাহী সড়ক পরিবহণ গ্রুপ, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজশাহী সড়ক পরিবহণ গ্রুপ, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যান মালিক সমিতি, রাজশাহী জেলা ট্যাক মালিক গ্রুপ এ সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) তোফায়েল আহাম্মেদ।
সভায় বক্তব্য দেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিজাম উল আযীম, রাজশাহী সড়ক পরিবহণ গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম, জেলা ট্যাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইদুল ইসলাম, নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী প্রমুখ। এসময় রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও ট্যাংলোরি, কার্ভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজশাহী সড়ক পরিবহণ গ্রুপ, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, রাজশাহী সড়ক পরিবহণ গ্রুপ, রাজশাহী জেলা ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যান মালিক সমিতি, রাজশাহী জেলা ট্যাক মালিক গ্রুপের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী এবং রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় রাজশাহী মহানগর পুলিশের পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, সময়ের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। তাই সুস্থভাবে প্রতিটি গাড়ি চালানো দরকার। আমরা শুনেছি ড্রাইভার ভাইয়েরা গাড়ি চালিয়ে ক্লান্ত হলে গাঁজা অথবা নেশা জাতীয় কিছু খান। এতে নাকি তাদের ক্লান্তি দূর হয়। মনে ফুর্তি আসে। কিন্ত এটা করা উচিৎ নয়। গাড়ি চালকদের হাতেই গাড়ির সকল যাত্রীদের জীবন মরণের দায় উল্লেখ করে পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, আপনার গাড়ির স্টায়ারিং ধরলে পরিবারের কথা চিন্তা করে, ও গাড়ির প্রতিটি যাত্রীর কথা চিন্তা করে সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বক্তব্য প্রদানকালে আরো বলেন, রাস্তায় কিছু অবৈধ যানবহনের ফলে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে, যেমন ইঞ্জিনচালিত অটোরিক্সা। এই যানবহনগুলো রাস্তায় উঠে যানজট সৃষ্টি করে। যাতে যানবহনগুলোর যানজট সৃষ্টি না করতে পারে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নসিমন করিমনের সঙ্গে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। বাস্তবতা হলো- এই ধরনের যানবহনগুলোর উপর লাখ লাখ লোক নির্ভরশীল হয়ে গেছে। আমরা সাময়িকভাবে বন্ধ করলেও আবার দেখা যায়, এই গাড়িগুলো চলছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে আমাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম আরো বলেন, অনেক সময় একটি ড্রাইভার একটি টিপ থেকে এসে কোন আরাম না করে আবার গাড়ি নিয়ে চলে যায়। এর ফলে সেই ড্রাইভার ক্লান্ত হয়ে অনেক সময় গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে যায়। এর ফলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই জন্য দূরপাল্লার প্রতিটি যানবাহনে দুটি করে গাড়ি চালক রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়াও রাস্তার পার্শের ফুটপাতগুলো অবৈধ দখল হয়ে গেছে ফলে সড়কে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই জন্য রাস্তার পাশে যে ফুটপাতগুলোর অবৈধ দখলমুক্ত করতে খুব দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
মতবিনিময় সভায় পরিবহণ শ্রমিক ও নেতৃবৃন্দরা তাদের সমস্যা ও দাবিসূমহ তুলে ধরেন এবং সেগুলোর সমাধানের পুলিশের সহযোগিতা চান।
এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলামকে বিভিন্ন পরিবহণ শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এছাড়াও নগর পুলিশের পক্ষ থেকে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সকলকে অবগত করা হয় এবং ট্রাফিক আইন সংক্রান্ত লিফলেট বিতরণ করা হয়।