শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিনিধি :
‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপে একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে’ রোববার (৪ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের অসহযোগ আন্দোলন। এর মধ্যে সারাদেশের মত রাজশাহীতেও বিক্ষোভ মিছিল করছে আন্দোলনকারীরা।
রোববার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে দশটার দিকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই মিছিল শুরু হয়।
এসময় ‘আমার ভাই মরলো কেন, শেখ হাসিনা জবাব দে’, ‘এক দফা এক দাবি, শেখ হাসিনা কখন যাবি’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের চামড়া, তুলে নিবো আমরা’, ‘এক দুই তিন চার, শেখ হাসিনা গদি ছাড়’, ‘ছি ছি হাসিনা, লজ্জায় বাচিনা’, ‘ভারতের নায়িকা, পদত্যাগ করে যা’, ‘হইহই রইরই, ছাত্রলীগ গেলি কই’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরো দেবো রক্ত’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’, ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো ‘, ‘লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাড়ে দশটার দিক থেকে রুয়েট গেটের সামনে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। রাজশাহীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আন্দোলনে এসেছে শিক্ষক, অভিভবাকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। তাদের অনেকের হাতে রয়েছে লাঠি, মাথায় পতাকা বাধা।
আজ কাফনের কাপড় পড়ে স্লোগান দিচ্ছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহ-সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার। বেলা সোয়া এগারোটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার রুয়েট গেটের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছেন হাজারো আন্দোলনকারী। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সেখান থেকে সরে গিয়ে নগরীর ভদ্রা এলাকায় অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। তারা সড়কের উপর বিক্ষোভ মিছিল করছে।
এদিকে সতর্ক অবস্থানে থাকার ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। এই অবস্থায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজশাহী জুড়ে। সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সরেজমিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এলাকায় দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে মোতায়েন করা রয়েছে পুলিশ ও বিজিবি। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে টহল দিচ্ছে পুলিশ। মহাসড়কে বাস-ট্রাক চলাচল করছে খুবই সীমিত পরিসরে। চলছে রিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি, লেগুনা ও মোটরসাইকেল। রাস্তায় গণমানুষের উপস্থিতি তুলনামূলক কম।
কথা হয় নগরীরা তালাইমারি মোড় এলাকার কয়েকজন দোকানি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তারা বলছেন, দেশের বর্তমান অবস্থা অবশ্যই কাম্য না। সরকার এখন সব দাবি মেনে নিতে চাচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিন আগে এই কথাটা বললে ও উস্কানিমূলক কথা না বললে পরিস্থিতি এতোদূর গড়াতো না।
আমরা চাই, দেশ দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে যাক। আমাদের মত খেটে-খাওয়া মানুষের জন্য সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। এর আগে, শনিবার (৩ জুলাই) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হল খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাবির নেতারা। আজ শেষ হবে সেই আল্টিমেটাম। আজকের মধ্যে হল খোলা না হলে শিক্ষার্থীরা নিজ দায়িত্ব হল খুলে প্রবেশ করবে বলে জানান রাবির অন্যতম সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী মেশকাত।