শিবগঞ্জ প্রতিনিধি :আমের রাজধানী নামে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর আমের মুকুল নিয়ে সংশয়ে পড়েছে আম ব্যবসায়ী ও আম চাষীরা। তাদের আশংকা এবছরে আমের ফলন ভাল হবে না। কারণ প্রতিবছর এ সময় বাগানে আমের গাছে মুকুলে মুকুলে ভরপুর থাকে।
তখন এবার এখনো গাছে পুরাপুরি মুকুল আসেনি। আম ব্যবসায়ী ও আম চাষীরা বলছেন জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে এবার শীতকালে দীর্ঘমেয়াদী শৈত্য প্রবাহ,অতিরিক্ত শীত ও ঠান্ডা হওয়ায় আমের গাছে মুকুল আসছে না।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছেন, সঠিক নিয়মে ও উপযুক্ত সেচ ও স্প্রেসহ অন্যান্য প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পারলে সামনে কিছু দিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই মুকুল আসবে। শীত ও ঠান্ডার কোন প্রভাব পড়বে না।
সরেজমিনে আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে ফেব্রুয়ারী মাসের দুই সপ্তাহ পরেও আম বাগানে শত শত আম গাছে কোন মুকুল নেই। দু-একটি গাছে থাকলে একেবারেই কম।
আম চাষী ও উদ্যোক্তা শিবগঞ্জ ম্যাংগে প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন শামীম খান জানান, জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে এ বছর দীর্ঘমেয়াদী শীত ও ঠান্ডা হওয়ায় আম বাগানে এখনো মুকুল আসেনি। তাই খুব চিন্তিত আছি। কারণ গাছে মুকুল না আসায় অনেকটা হতাশ হয়েছি। তারপর ওপর আবার এবছরে বালাইনাশকের দাম কয়েক বছরের মধ্যে এবার অনেক বেশী হওয়ায় খরচ অনেক বেশী হচ্ছে। তবু কৃষি অফিসারের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার আশায় সেচ ও বালাই নাশক স্প্রে করছি।
তিনি আরো বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার সাথে সাথে শ্রমিককের দামও বাড়ছে।
আম চাষী ও ব্যবসায়ী রবিউল আওয়াল বলেন, প্রায় ১০ বছরের মধ্যে এবার প্রথম ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আমের মুকুর পুরাপুরি দেখা দেয়নি। যা আমাদেরকে অনেকটা হতাশ করেছে।
তিনি আরো বলেন, গত ১০ বছরের মধ্যে এত শীত ও ঠান্ডা পড়েনি। মুুকুল দেরিতে আসলে আমও দেরিতে হবে। যার প্রভার আম কেনাবেচার ক্ষেত্রে পড়বে।
একই ধরনের হতাশার কথা জানালেন আম চাষী ও ব্যবসায়ী মিলন ও বেলাল উদ্দিন। এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, গত বছর যেহেতু ব্যাপক মুকুল এসেছিল। সেহেতু এবার মুকুল কম আসতে পারে।
তিনি আরও বলেন, শীত ও ঠান্ডার কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রায় সব আম বাগানেই কমবেশী মুকুল আসতে শুরু করেছে। আগামী ১৫দিনের মধ্যে সবগুলো আম গাছে মুকুল বের হবে।
অন্যদিকে চাঁপাইনবগঞ্জ জেলা আম গবেষণা কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুখলেশুর রহমান জানান, আম গাছে মুকুল আসেনি বলে হতাশ হওযার কিছু নেই। এ বছর শীত ও ঠান্ডা বেশী হওয়ায় মুকুল আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে আগামী ১৫দিনের মধ্যে প্রায় গাছে মুকুল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ১৫দিন পার হয়ে গেলে গাছে মুকুল না এসে নতুন পাতা গজাবে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিসারদের সাথে পরামর্শ করে সঠিকভাবে সেচ ও বালাই নাশক স্প্রে করতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই মুকুল আসবে।
উল্লেখ্য, এবছর চাঁপাইনবাগঞ্জ জেলায় প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে।
হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে।