রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নওগাঁ প্রতিনিধি :
আবারো পুরস্কার পাচ্ছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের লেখক ও সমাজসেবক এম এ ওয়াজেদ। তার সাফল্য মুকুটে এবার যুক্ত হচ্ছে বাঙগালির কণ্ঠ ও ঢাকা সাহিত্য পুরস্কারের দুটি পালক।
আগামী ১৯জুলাই কবি ও সংগঠক হিসেবে বাঙালির কণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার তার হাতে তুলে দেয়া হবে। ইতোমধ্যেই পুরস্কার দুটি গ্রহণের জন্য কবিকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। এর আগে চলতি বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় কবি পরিষদ থেকে কবিতা ক্যাটেগরিতে পুরস্কৃত হয়েছেন লেখক এমএ ওয়াজেদ।
এমএ ওয়াজেদের পুরো নাম মোহা: আব্দুল ওয়াজেদ। ১৯৭৫সালের ২৪ডিসেম্বর নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার জবই গ্রামে এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম। পিতার নাম মো: মকবুল হোসেন এবং মাতার নাম মোসা: মরিয়ম বিবি।
শিক্ষা জীবনের প্রাথমিক স্তর থেকেই সাফল্য পেতে শুরু করেন মেধাবী এই লেখক। তিনি ১৯৮৪ সালে পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় এবং ১৯৮৭ সালে অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি প্রাপ্ত হোন। ১৯৯০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হোন। এ কারণে তাকে সরকারি বৃত্তি প্রদান করা হয়।
তিনি উচ্চ শিক্ষা জীবন কাটিয়েছেন শিক্ষার শহর রাজশাহীতে। রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রী কলেজ থেকে ১৯৯২ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৯৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তিসহ এলএলবি (অনার্স ) এবং ১৯৯৮ সালে এলএলএম ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।
তিনি নওগাঁয় এ্যাডভোকেট বার সমিতির সদস্য। নিজ জেলায় মানুষকে আইনী সেবা প্রদান করছেন।
ছোটবেলা থেকেই কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেন এমএ ওয়াজেদ। কবিতার সাথে তার গভীর প্রেম। অল্প দিনেই তার লেখা এক গুচ্ছ বই প্রকাশ হয়েছে। যা ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে।
ইতোমধ্যেই তার লেখা সাতটি একক কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি যৌথ কাব্যগ্রন্থ’ ও একটি গল্পগ্রন্থ বেড়িয়েছে তার। একক কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ২০২০ সালে ‘আলোকের ঝরনাধারা’ ও ‘অদ্ভুত আঁধার চারদিকে’। ২০২৩ সালে অমর একুশে বইমেলায় কারুবাক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় ‘প্রভাতের পুষ্পসুবাস’।
২০২৪ এ অমর একুশে বই মেলায় নব সাহিত্য প্রকাশনী থেকে প্রকাশ হয় ‘বেদনার কোষকাব্য’ ও ‘অভিশংসিত সরোবর’। বাংলা প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পায় অন্তর্দহনের শেষ পৃষ্ঠা’ ও ‘হে হৈমন্তিকা যুবতী হও’।
যৌথ কাব্যগ্রন্থ’গুলো হলো অন্তরে অগ্নিশিখা, বুনো রোদ্দুর, ভোরের মাঝি, দ্বিভুজ, কবির কবিত্ব, স্বদেশের মৃত্তিকায় জননীর ঘ্রাণ, পড়ন্ত বিকেলের কাব্য, চাঁদনী রাতের কথা, বিহঙ্গ বাঁশরি, কাব্য ফেরি, প্রবাসী বুলবুল, কলমের আলো, ফিলিস্তিন আমার বারুদের ফুল ও মায়াবতীর নীলকাব্য। সম্প্রতি ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ নামে যৌথ গল্পপ্রন্থটিও প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকা ও জার্নালে তাঁর লেখা দেড়শোর অধিক কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
লেখক এমএ ওয়াজেদ দুই পুত্র সন্তানের জনক। বড় ছেলে সাদিক ওয়াকিল সাদ ২০২৩ সালে নওগাঁ সরকারি কেডি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে বর্তমানে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে এইচএসসিতে অধ্যায়নরত।
ছোট ছেলে সিহাব ওয়াদুদ হাবিব নওগাঁ সরকারি কেডি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সুমী একজন আদর্শ গৃহিণী। এমএ ওয়াজেদ লেখালেখির বাইরে বৃক্ষরোপণ, অসহায় মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা প্রদানসহ সামাজিক বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। সারাজীবন সাহিত্য রচনা ও সামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।