রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
চিহ্নিত মারধরকারি আতিকুর রহমান, শামসুল আরিফিন খান সানি ও আজিজুল হক আকাশ। ছবি: সংগৃহীত
রাবি প্রতিবেদক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের এক কর্মচারীকে মারধর করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। রোববার (১২ মে) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের গেটে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কর্মচারী মনিরুল ইসলাম। তিনি হলের প্রহরীর দায়িত্বে আছেন। অন্যদিকে অভিযুক্তরা হলেন, একই হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ইনিস্টিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইইআর) শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান, মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল আরিফিন খান সানি এবং একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ও মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশসহ আরও কয়েকজন।
ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম বলেন, সকালে সাড়ে ছয়টার দিকে আতিকের নেতৃত্বে আকাশ, সানিসহ বেশ কয়েকজন আমাকে মারধর করে। আমি নাকি নিয়াজ মোর্শেদকে সহযোগিতা করেছি, সেজন্য তারা আমাকে হাতে-গালে-মাথায় কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী শামসুল আরিফিন খান সানি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে আরেক অভিযুক্ত আজিজুল হক আকাশ বলেন, আমরা সকালে হলে যাই। সেখানে গিয়ে গার্ডকে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা তার ফোন চেক করে দেখতে পাই সে শিবির-ছাত্রদল ও নিয়াজ মোর্শদকে আমাদের তথ্য পাচার করেছে৷ মারধরের তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে দু-একটা চড়-থাপ্পর দেওয়া হয়েছে।
আরেক অভিযুক্ত আতিকুর রহমান বলেন, গতকাল হলে একটা ঝামেলা হয়। তখন এই কর্মচারী আমাদের বিভিন্ন তথ্য ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বহিরাগত ক্যাডারদের দিয়েছে। সেটার প্রমাণ আমরা পেয়েছি। তাই, সবার সামনেই তাকে একটু শাসন করা হয়েছে। এসময় হল প্রাধ্যক্ষ স্যারও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘তাকে কেউ মারধর করেনি। বহিরাগতদের বিভিন্ন তথ্য দেয়ার জন্য নেতাকর্মীরা তাকে জিজ্ঞেসাবাদ করেছে। তখন প্রাধ্যক্ষ এসে তাকে নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘রাতের ঘটনার পরে আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতে হলেই অবস্থান করি। সকালে আতিকের নেতৃত্বে সানি, আকাশসহ বেশ কয়েকজন হলের গার্ড মনিরুল ইসলামকে প্রচণ্ড মারধর করে। হলে যা শুরু হয়েছে কয়েকদিন পর হয়তো আমাদেরও মার খেতে হবে। এই ঘটনায় ওই কর্মচারীকে অভিযোগ দিতে বলেছি। সন্ধ্যায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এরআগে, শনিবার দিবাগত রাতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব গ্রুপ এবং সোহরাওয়ার্দী হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এতে সাতজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের কয়েকঘন্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।