সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী গোদাগাড়ী থানায় যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন, তার প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে)। শনিবার আরইউজে সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রকি এক যৌথবিবৃতিতে বলেছেন, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী জিডিতে চরম মিথ্যাচার করেছেন। বিবৃতিতে এর তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী গোদাগাড়ী থানায় জিডি করেন। জিডিতে তিনি বলেছেন, ‘তার প্রাণনাশের পরিকল্পনা নিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার আওয়ামী চেতনাবিরোধী সন্ত্রাসী-দাঙ্গাবাজ লোক জড়ো হয়েছিলো। সেখানে কয়েকজন সাংবাদিক তাকে অপ্রাসঙ্গিক ও অবান্তর প্রশ্ন করেছে। তিনি তাদের পেশাদারী সাংবাদিকের মতও প্রশ্ন করার জন্য অনুরোধ করেছে।’
তার এই জিডিতে তিনি উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের জড়িয়েছেন বলে মনে করে-আরইউজে। কারণ, সাংবাদিকরা তাকে কোনো অপ্রাসঙ্গিক ও অবান্তর কোনো প্রশ্ন করেন নি। তিনি ঘটনা-স্থলে এসে নিজেই সাংবাদিকদের কথা বলার জন্য ডাকেন। যার সমস্ত ভিডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের কাছে আছে। সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেলের কর্মী-সমর্থকদের দেখে ওমর ফারুক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এই লোকজন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এসেছেন। আর এ ঘটনার সাথে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা রয়েছে কি-না তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
ওমর ফারুক চৌধুরী সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে বলেন, মিটিংয়ের দিন উপজেলা পরিষদ চত্বরে কোন জনপ্রতিনিধির কর্মী-সমর্থকেরা আসতে পারেন না। একজন সাংবাদিক তখন ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের দেখে প্রশ্ন করেন, ‘আপনার সঙ্গেও অনেক লোক আছে, তারা কেন এসেছেন?’ এ প্রশ্ন শুনেই রেগে যান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি ওই সাংবাদিককে বলেন, ‘তোমার প্রবলেম হলো-তুমি অলওয়েজ বায়াস্ট হয়ে পয়সা খেয়ে প্রশ্ন করো। দিস ইজ ভেরি ব্যাড।’ এমপির সঙ্গে সাংবাদিকদের এতটুকুই কথোপকথন। এর বাইরে কোন কথা হয়নি। তিনি সাংবাদিকদের পেশাদারীত্বের সঙ্গে প্রশ্ন করতে অনুরোধও জানাননি। বরং, তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে যে কটূক্তি করেছেন, তার প্রতিবাদের মুখে তিনি দ্রুত সেখান থেকে চলে যান।
আরইউজে মনে করে, স্থানীয় রাজনীতিতে জনসমর্থন হারিয়ে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী সেদিন তিনি নিজেই অবান্তর ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছেন। শুধু সাংবাদিকদেরই নয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে হত্যার চেষ্টার সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না তিনি সে প্রশ্ন তুলে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এছাড়া তিনি নিজ দলের নেতাকর্মীদেরই ‘আওয়ামী চেতনাবিরোধী দাঙ্গাবাজ ও সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতেই তাঁর অসংলগ্ন কথাবার্তা বলার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাই তিনি যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের কথা জিডিতে উল্লেখ করেছেন তা স্পষ্ট।
সাংবাদিকদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলার জন্য রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন অবিলম্বে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি জিডি থেকে সাংবাদিকদের অংশ প্রত্যাহার করে নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে। তা না হলে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।