বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
এসএসসির ফরম পূরণে সেশন চার্জ ও বেতন গ্রহণ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন নগরীর শিক্ষকরা। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। ইতোমধ্যে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিফতর, জেলা শিক্ষা অফিস বরাবর তারা চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন।
শিক্ষকরা বলছেন, গতবছর ফরম পূরণে পরীক্ষার বছরের সেশন চার্জ ও ছয় মাসের বেতন নেয়ায় পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় বোর্ড নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত ফি ফেরত দিতে হয়েছে। এবছর যেন এ ধরনের কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এজন্য আগে থেকেই নির্দেশনা জানতে চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে। শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যদি নির্দেশনা আসে বোর্ডের ফি এর সাথে পরীক্ষার বছরের সেশন চার্জ ও ৬ মাসের বেতন নিতে পারবে তাহলে শিক্ষকরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী তা গ্রহণ করবেন। যদি সেশন চার্জ ও বেতন নেয়ার কোনো নির্দেশনা না থাকে তাহলে বেতন ও সেশন চার্জ গ্রহণ করবেন না। যেহেতু নভেম্বরের মধ্য সময় থেকে ফরম পূরণ শুরু হবে তাই শিক্ষকরা এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছেন।
রাজশাহী নগরীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ফোরামের সভাপতি ও শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মাওলা বলেন, আমরা নগরীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা সবাই সেশন চার্জ ও বেতন গ্রহণ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা জানতে চেয়েছেন। যাতে ফরম পূরণের সময় এ বিষয়ে কোনো ধরনের বিব্রত ঘটনা না ঘটে। গত বছর ফরম পূরণের সময় সেশন চার্জ ও ফি নেয়ায় সারাদেশে এটা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় ফি ফেরত দিতে হয়। এইবছর এই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চেয়েছেন।
সেশন চার্জ ও বেতনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চাইলেও শিক্ষকরা সেশন চার্জ ও বেতন গ্রহণের পক্ষে। তারা বলছেন, অতীতে শিক্ষাবোর্ডের ফি’সহ এসএসসি পরীক্ষার বছরের সেশন চার্জসহ ৬ মাসের বেতন গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও মার্চ মাসে তাদের পরীক্ষা শেষ হয়। এর ফলে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ক্রীড়া, সংগীত, চিত্রাঙ্কনসহ সব ধরনের শিক্ষাক্রমিক কার্যাবলিতে অংশগ্রহণ করে থাকে এবং পুরস্কার গ্রহণও করে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের সেশন কলেজে গিয়ে জুলাই মাসের প্রথম তারিখ থেকে শুরু হয়। অর্থাৎ ওই শিক্ষার্থীরা জুন পর্যন্ত ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হয়। এ কারণে ৬ মাসের বেতন নেয়া হত যা গতবছরের আগ পর্যন্ত কার্যকরি ছিল। সেশন চার্জ ও বেতন হতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সারা বছর শিক্ষক-কর্মচারীর প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত বর্ধিত বেতন ভাতাসহ অন্যান্য খরচে ব্যয় করত। তাই শিক্ষকরা সেশন চার্জ ও বেতন গ্রহণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা জানতে চেয়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো সিদ্ধান্ত নেয় নি। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানার জন্য ঢাকায় এসেছি। আশা করছি আগামী রোববারের দিকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা জানাতে পারব।