‘কদর্য’ বিতর্কেও ট্রাম্পের হার: সিএনএন

আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০১৬, ১১:৫২ অপরাহ্ণ

01. Hilary- Trump
সোনার দেশ ডেস্ক
ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিন্টনের দ্বিতীয় বিতর্কটি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক নির্বাচনী ইতিহাসে ‘সবচেয়ে কদর্য’ বিতর্কের উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। অন্ততপক্ষে সিএনএন এমনটাই বিবেচনা করছে। বিতর্কের পর সিএনএন-এর মতামত জরিপে ৫৭ শতাংশ দর্শক হিলারির পক্ষে এবং ৩৪ শতাংশ দর্শক ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন বলে মতামত জানিয়েছেন। সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন এমন ব্যক্তিরা ওই জরিপে ভোট দেন।
কয়েক দশকের প্রথা ভেঙ্গে রোববার রাতের এই দ্বিতীয় বিতর্ক শুরুর আগে পরষ্পরের সঙ্গে করমর্দন করতে অস্বীকৃতি জানান আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমক্র‌্যাটিক প্রার্থী হিলারি ও রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্কে ট্রাম্প স্বভাবজাত বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করে হিলারির আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। মিসৌরির সেন্ট লুইস ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে এ বিতর্কে ট্রাম্প বলেন, তিনি নির্বাচনে জয়ী হলে হিলারির ই-মেইল কেলেঙ্কারির বিষয়ে বিশেষ একজন প্রসিকিউটর নিয়োগ দেবেন। ট্রাম্প বলেন, “আপনার অবশ্যই লজ্জিত হওয়া উচিত।” প্রতিক্রিয়ায় হিলারি বলেন, ট্রাম্পের মত মনমানসিকতার কেউ হোয়াইট হাউসে নেই বলে তিনি স্বস্তিবোধ করছেন।
সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প বলেন, “আপনাকে জেলে যেতে হবে।” প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র মাসখানেক আগে ট্রাম্পের নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অডিও টেপ ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়ে গেছেন নিউ ইয়র্কের এই ব্যবসায়ী। এক দশক আগে করা নিজের ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরও ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। এমনকি নিজ দলের একের পর এক শীর্ষ নেতার সমর্থন হারাচ্ছেন তিনি। সিএনএন-র প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অবস্থায় আত্মপক্ষ সমর্থনে হিলারির স্বামী সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের যৌন কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টানার কদর্য পথটিই বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। বিতর্কে বিল ক্লিনটন সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, “আমারটা কেবল কথা, আর বিল ক্লিনটনতো করে দেখিয়েছেন।”
এ বিষয়ে হিলারি বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্যই দেখিয়ে দেয়, কেন তিনি হোয়াইট হাউসের জন্য অনুপযুক্ত। “ওই অডিও তাকে উপস্থাপন করে না বলে দাবি করছেন ট্রাম্প; কিন্তু আমার ধারণা, যারা এটি শুনেছেন তারা বুঝতে পারছেন, এটি কেবলমাত্র তাকেই উপস্থাপন করে”, বলেন হিলারি। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্কের আগে বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগকারী তিন নারী- পলা জোনস, জুয়ানিতা ব্রডরিক ও ক্যাথলিন উইলির সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। বিতর্ক অনুষ্ঠানে তারা সামনের সারিতেই বসে ছিলেন।
বিতর্কে ফাঁস হওয়া নারীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের ওই টেপকে ‘লকার রুমের কথা’ বলে উড়িয়ে দেন ট্রাম্প। বলেন, নারীদের প্রতি তার যথেষ্ট ‘শ্রদ্ধা’ আছে। এ প্রসঙ্গ টেনে হিলারি বলেন, এ ঘটনা ট্রাম্পের চরিত্রের ‘প্রকৃত ছবি’ তুলে ধরেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টশিয়াল বিতর্কে সাধারণত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং অন্যদের পরিকল্পনার ভুলগুলো খুঁজে বের করে প্রতিপক্ষকে তীব্র বাক্যবাণে জর্জরিত করেন। কিন্তু রোববার রাতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কদর্য ভাষায় ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ টেনে পরষ্পরকে আক্রমণ করে গেছেন।
এই রাতে ট্রাম্প হিলারিকে ‘শয়তান’ ‘মিথ্যাবাদী’ এবং ‘তার হৃদয় ঘৃণায় পূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেন। সিএনএন-র অ্যান্ডারসন কুপার ও এবিসি-র মার্থা রাদাটজ বির্তক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। সিএনএন-র প্রতিবেদনে বলা হয়, বিতর্কে হিলারি কথা বলার সময় নানাভাবে তাকে বিরক্ত করে গেছেন ট্রাম্প। প্রথম বিতর্কের তুলনায় এ রাতে দ্রুত মেজাজ হারান রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।- বিডিনিউজ