শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক:
শুরুটা হয়েছিল বছর চোদ্দ আগেই। তবে প্রভাব চোখে পড়তে শুরু করেছে এই সম্প্রতি। ক্রমশ কমে আসছে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘূর্ণনের গতি। বিষয়টি গুরুত্ব ততটা পেত না, যদি একই পরিস্থিতি দেখা যেত গ্রহের পৃষ্ঠতলেও। সেখানে কিন্তু গতি শ্লথ হচ্ছে না। সম্প্রতি গতির তারতম্যের এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা। তাঁরাই আবিষ্কার করেছেন এই ‘গরমিল’। গবেষকদের দাবি, এই ফারাক যদি ভবিষ্যতেও স্থায়ী হয়, তাহলে এর বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের স্থিতাবস্থা এবং সর্বোপরি দিন-রাতের মেয়াদের উপর। বিশেষ করে দিনের। ‘নেচার’ জার্নালে এই গবেষণার বিষয়বস্তু প্রকাশিত হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘূর্ণনের গতি হ্রাস পেতে শুরু করেছিল ২০১০ সাল থেকে। চল্লিশ বছরে সেই প্রথম জানা গিয়েছিল যে, গ্রহটির ‘ম্যান্টল’ (গধহঃষব) অংশের তুলনায় অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘূর্ণন গতি ক্রমশ কমছে। প্রসঙ্গত, পৃথিবীর এই অভ্যন্তরীণ অংশটি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৪,৮০০ কিলোমিটারেরও বেশি নিচে অবস্থিত। এই অংশে প্রাধান্য রয়েছে লোহা এবং নিকেলের। আর সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য, এই অংশটি অকল্পনীয় উষ্ণ।
এই তথ্যের উপর গবেষণার জন্য বিজ্ঞানী জন ভিদাল এবং তাঁর সহকর্মীরা ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে হওয়া ১২১টি ভূমিকম্পের তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে শুরু করেন। ওই কম্পনগুলির উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সাউথ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জে বার বার হয়েছিল। এছাড়াও বিজ্ঞানারী ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সোভিয়েতের তরফে এবং ফরাসি ও মার্কিন পরমাণু পরীক্ষার ফলাফলও খুঁটিয়ে দেখেন। তার পরই এই সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছন।
ভিদালের বক্তব্য, ‘‘সিসমোগ্রাম দেখেই বিষয়টি চোখে পড়েছিল। তবে আরও বার বার ফলাফল দেখি। তখনই নিশ্চিত হই।’’ তাঁর মতে, ঘূর্ণন গতি হ্রাস পাওয়ার কারণ, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের অংশ ঘিরে থাকা তরলের অশান্ত-অনিয়ন্ত্রিত গতি, যা ভূ-চৌম্বকীয় ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। এছাড়াও রয়েছে মহাকর্ষ বলের প্রভাব।
তথ্যসূত্র: সংবাদ প্রতিদিন অনলাইন