কমেছে সবজি ও মাছের দাম

আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০১৬, ১১:৫২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক



শীতের প্রায় সবধরনের সবজি উঠতে শুরু করেছে নগরীর বাজারগুলোতে। সেই জন্য বাজারে কমতে শুরু করেছে সবজির দামও। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রায় ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে বেশকিছু সবজির দাম। তবে সেই সঙ্গেই অপরিবর্তত রয়েছে কিছু কিছু সবজির দাম। বাজারগুলোতে শুধু সবজির দামই নয়, বরং দাম কমতে শুরু করেছে মাছেরও। কার্প জাতীয় মাছের দামও ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমে এসেছে বাজারে। কিন্তু বাজারে অন্য মাছের দামে তেমন প্রভাব পরে নি। বাজারে শীতকালীন সবজির মধ্যে টমেটো, নতুন আলু এবং ফুলকপির ব্যাপক আমদানি হওয়ায় দাম কমেছে। মাছের বাজারে ক্রেতাদেরও আনাগোও অন্য সময়ের থেকে একটু কম। আর আমদানি স্বাভাবিক থাকায় মাছের দাম কম বলে জানাচ্ছেন মাছ বিক্রেতারা।
নগরীর সাহেববাজার মাস্টারপাড়ার সবজি বিক্রেতা ইয়াসিন আলী জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে বাজারে সবজির আমদানি অনেকটাই বেড়েছে। গত সপ্তাহে আলুসহ পেঁয়াজের দাম বেশি থাকলেও এ সপ্তাহে তা অনেকটাই কমে এসেছে। তবে নতুন শিম বরবটিসহ দুই তিনটি সবজির দাম গত সপ্তাহের মতই আছে।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কচুর লতি ২৫ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৩২ টাকা, আলু ২২ টাকা, শশা ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকা, পটল ২৫ টাকা এবং মুলা ৮ থেকে ১০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৩০ টাকা, পেঁপে ১৫ টাকা, কুরিকচু ২৫ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ঢেঁড়াস ৩০, শিম ৬০, ফুলকপি ৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ২০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৮ থেকে ১০ টাকা, ঝিঙ্গা ২৫ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস ২৫ থেকে ৩০ টাকা আর কুমড়া জালি ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সাইফুল ইসলাম নামের এক বিক্রেতা জানান, আগের থেকে শীত একটু বেশি পড়ায় মাঠে শীতের সবজিগুলো  বেশি উৎপাদন হচ্ছে এবং এক সাথে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, নতুন আলু এবং নতুন শাকের আমদানি হওয়ার ফলে দাম গত সপ্তাহের থেকে অনেক কমেছে।
বাজারের মুদি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে বর্তমানে ডালের দাম একটু বেড়েছে বাঁকি সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম গত সপ্তাহের মতই রয়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ২৫ টাকায়, ভারতীয় পেঁয়াজ ২০ থেকে ২২ টাকা, রসুন ১৭০ টাকা, আদা ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এছাড়া শুকনা মরিচ প্রতি ১০০ প্রাম ২৪ টাকা, হলুদ ১৮ টাকা, জিরা ৪০ টাকা, ধনিয়া ১৮ দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, লবন ৪০ টাকা, আটা ২৪ টাকা, পোলাও চাল ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের ডাল ব্যাবসায়ী সাখাওয়াত বলেন, এ সপ্তাহে ডালের দাম স্বাভাবিক থাকলেও কালাই এবং মসুর ডালের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা, কলাই ডাল ৮৫ থেকে ১২০ টাকা, ছোলা ডাল ১২৫ টাকা, খেসারি ডাল ৭৮ থেকে ৬৫ টাকা, মটর ডাল ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেল, সরবারহ আগের থেকে দ্বিগুন থাকায় দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে শাকের বাজার। নগরীর শাক ব্যাবসায়ীরা জানান, শীতের সবজির সঙ্গে সঙ্গে শাকের উৎপাদন অনেক বেড়েছে পেয়েছে। শীতের মৌসুমি শাকের উৎপাদন বাড়ায় সব শাকের দাম কমেলেও বেড়েছে সবুজ শাক ও লাল শাকের।
নতুন শাক হিসাবে বাজারে উঠেছে খেশারির শাক তবে আমদানি কম হওয়াই দাম একটু বেশি বলে জানান ক্রেতারা। প্রতি কেজি খেসারির শাক বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি লাল শাক ২০ টাকা, সরিষা শাক ১২ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা, লাউ শাক ২০ টাকা, ডাটা শাক ১৫ টাকা, কচু শাক ১২ টাকা, সবুজ শাক ২০ টাকা, পুই শাক ২০ টাকা এবং পালং শাক ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর সাহেববাজারের মাছ বিক্রেতা আইনুল জানান, কার্প জাতীয় মাছ বাদে দেশি এবং নদীর মাছের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর শুক্রবার ক্রেতার সংখ্যা বেশি হয়। আর নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়াই মাছের আমদানি অনেক কম হলেও শীতে সবাই মাছ কম খায় আর জানালেও ক্রেতার সংখ্যা একটু কম থাকে।
বর্তমানে বাজারে কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, চিতল ৬০০ থেকে ৬৫০, রুই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১১০ থেকে ১২০ টাকা, পাঙ্গাস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা, দেশি কৈ মাছ ৬০০ ও হাইব্রিট কই ১৫০ টাকা, শোল মাছ ৫৫০ টাকা, মৃক্রা ৩৩০ টাকা, গ্রাস কার্প ২০০ টাকা এবং মিরর কার্প ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১১০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পুকুর ও দিঘি থেকে সংগৃহীত মাছের দাম একটু স্বাভাবিক থাকলেও নদী ও দেশি প্রজাতির মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে নদীর বড় চিংড়ি ৫০০ টাকা ও ছোট চিংড়ি ২৫০ টাকা, পিউলি মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ টাকায়, কাটাপাতাসি ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা, ঢেঁড়ে মাছ ৫০০ টাকা, পাবদা ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, বাছা মাছ ৬০০ এবং রিঠা মাছ ৩৫০ টাকা দরে  প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও আইড় মাছ ৫৫০ টাকা, শিং মাছ ৫৩০ টাকা, গুচি মাছ ৪৫০ টাকা, মায়া মাছ ৪২০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে এ সপ্তাহে বাজারে পদ্মার একটু বড় সাইজের ইলিশ মাছ উঠায় ইলিশের দামটা ২০০ টাকা বৃদ্ধি  পেয়েছে। পদ্মার ও বরিশালের বড় আকারের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছ কিনতে আসা ক্রেতা সৈকত হাসান জানান, গত সপ্তাহের থেকে আজ প্রত্যেক মাছের দাম একটু কম মনে হচ্ছে। কিন্তু বড় ইলিশের দাম আকাশ ছোঁয়া।
মাংশের বাজারে গিয়ে দেখা গেল, স্বাভাবিক রয়েছে মুরগির বাজার। গত সপ্তাহের মতই এই সপ্তাহে মুরগির বাজার একই রয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। মুরগি ব্যবসায়ী সবুর হোসেন জানান, গত সপ্তাহের মত এ সপ্তাহে মুরগির দাম একই আছে। সাদা কক বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭০ টাকা, ব্রয়লার ১২৫ টাকা, দেশি মুরগি ৩০০, সোনালি মুরগি ২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৭০ এবং হাঁস ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বর্তমানে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪২০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০০ টাকা দরে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ