সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর বাজারগুলোতে কমে নি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। গত ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বৃদ্ধি পায় চাল, চিনি ও গুড়া দুধ এবং তেলের দাম। দু‘সপ্তা অতিবাহিত হলেও তা এখনও কমেনি। এতে ক্রেতাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের। বিক্রেতাদের দাবি, অসাধু ব্যাবসায়ীদের সিন্ডিকেট এর জন্য দায়ী।
দুই সপ্তা পূর্বে নগরীর বাজারগুলোতে চিকন স্বর্ণা ও আটাশ চালসহ সবধরনের চালের দাম প্রতিকেজিতে দুই টাকা থেকে চার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে গুড়া দুধের দাম প্রতিটি পাঁচশ গ্রামের প্যাকেটে ৩০ টাকা করে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে লিটারে ৫ টাকা পর্যন্ত। সবজির মধ্যে বেড়েছে ফুলকপি, আলু ও লেবুর দাম, কমেছে, শশা, টমেটো, করেলা ও লাউয়ের দাম। তবে স্বাভাবিক রয়েছে অন্য সব শাক-সবজি এবং মাছ, মাংশ ও ডিমের দাম।
গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর সাহেববাজার মাস্টারপাড়ার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল দুই সপ্তাহের ন্যায় চিকন স্বর্ণা চাল গতকালও বিক্রি হয় প্রতিকেজি ৩৬ টাকা দরে। প্রতিকেজি ৩৪ টাকা দরে গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আটাশ চাল প্রতিকেজিতে চার টাকা বেশি দরে প্রতিকেজি ৪৬ টাকায়, মিনিকেট চাল কেজিতে তিন টাকা বেশি দরে ৫০ টাকায়, বাসমতি ও চিনিগুড়া আতব চাল কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেশি দরে ৬০ ও ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। আটা প্রতিকেজি ২২ টাকা থেকে ২৩ টাকা দরে বিক্রি হয়।
বাজারে বেশি দামে চাল বিক্রির বিষয়ে বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন কারণে ধানের দাম বেশি। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটা অসাধু ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি করেছে। সেই জন্য বেশি দামে বাজারে চাল বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের দাম কমলে চালের দাম কমতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন বিক্রেতারা।
সাহেববাজার মাস্টারপাড়ার সবজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ সপ্তাহে বাজারে বেড়েছে ফুলকপি, আলু ও লেবুর দাম, কমেছে, শশা, টমেটো, কল্লা ও লাউয়ের দাম। এছাড়া স্বাভাবিক রয়েছে অন্য সব শাক-সবজির দাম।
মাস্টারপাড়ার সবজি ব্যবসায়ী শাহিনুর ইসলাম শাহিন ও নিটুল বলেন, গত সপ্তায় ফুলকপি প্রতিকেজি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় প্রতিকেজি ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা দরে। গতকাল প্রতিকেজি আলু বিক্রি হয়, ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায়, যা গত সপ্তায় বিক্রি হয় প্রতিকেজি ১০ টাকা থেকে ১৩ টাকা দরে আর গত সপ্তাহ পর্যন্ত লেবু রকমভেদে প্রতি হালি ৬ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় ১০ টাকা থেকে ১৬ টাকায়। অন্যদিকে গত সপ্তায় শশা প্রতিকেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় প্রতিকেজি ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা দরে। ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে গত সপ্তায় প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় প্রতিকেজি ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা দরে। করল্লা গত সপ্তায় প্রতিকেজি ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গতকাল তা বিক্রি হয় প্রতিকেজি ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দরে আর লাউ গতকাল বিক্রি হয় প্রতিপিচ ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে, যা গত সপ্তায় বিক্রি হয় প্রতিপিচ ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে।
মাস্টারপাড়ার সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে প্রতিকেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা, আদা ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, রসুন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, গাজর ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা, ছিম ২০ টাকা, বেগুন ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা এবং প্রতিপিস বাঁধা কপি ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা আর চাল কুমড়া ৫০ টাকা। এছাড়াও লাল শাক ও সবুজ শাক প্রতিকেজি ১৫ টাকায়, পালং শাক প্রতিকেজি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকায় আর কলমির শাক প্রতিকেজি বিক্রি হয় ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
এদিকে মুদির ব্যাবসায়ীরা জানান, দু’সপ্তা আগে বাজারে বৃদ্ধি পাওয়া গুড়া দুধ ও তেলের দাম এখনো কমেনি। বাজারে বর্তমানে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৮ টাকায়, পূর্বে যার দাম ছিল ৮৬ টাকা লিটার। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটার বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, পূর্বে যার দাম ছিল ৯৫ টাকা।
এছাড়াও বাজারে দেশি মটর ডাল প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, মসুর ও মুগ ডাল ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, বুটের ডাল অষ্ট্রেলিয়ান প্রতিকেজি ১০০ টাকা আর দেশি ১২০ টাকা, কালাই ডাল ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাংশ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি গরুর মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা থেকে ৪৪০ টাকায় আর খাশির মাংশ ৬৫০ টাকা থেকে ৭২০ টাকা দরে। এদিকে সোনালি মুরগি ২২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৩৫ টাকা, দেশি মুরগি ৩০০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা আর লেয়ার মুরগি ১৬০ টাকা এবং কক মুরগি ২১০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হয়। এছাড়াও প্রতিহালি মুরগির সাদা ডিম ২৬ টাকা আর লাল ২৮ টাকা দরে বিক্রি হয়।
অন্যদিকে বাজারের মাছ বিক্রেতা সাহাবুর জানান, বাজারে গতকাল মিরকা মাছ ১৬০ টাকা, সিলভার কার্প মাছ ১২০ টাকা, রুই মাছ ১৮০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ টাকা, বিরগেট মাছ ২০০ টাকা, ট্যাংরা মাছ ৬০০ টাকা, বাসপাতা মাছ ৮০০ টাকা, পাবদা মাছ ৭০০ টাকা এবং ইলিশ মাছ ১৬‘শ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হয়।